• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    সারাদেশে বিশেষ অভিযানে বিএনপি নেতাকর্মীসহ ২৮৫ জন গ্রেফতার।

    রেলওয়ে স্টেশন-লঞ্চ টার্মিনালে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে

    সারাদেশে পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে বুধবার আরও ২৮৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর ৫০টি থানায় ২৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে রাষ্ট্রীয় নানা কর্মসূচি রয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার স্বার্থে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধীকে গ্রেফতারে ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর বিশেষ অভিযান চলছে। এ সময় আবাসিক হোটেল, মেস, সড়কের পাশাপাশি রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।

    পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২৫৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে রাজধানীতে গ্রেফতার করা হয়েছে ১ হাজার ৫২৪ জনকে।

    ১০ ডিসেম্বর বিএনপির জনসভা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। তবে যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ির যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একাধিক পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদকে অনেকেই নির্যাতন হিসেবে দেখছেন।

    ধামরাই থেকে নিয়মিত ঢাকায় আসা মোবারক হোসেন বলেন, ঢাকায় ঢোকার আগে ও পরে পুলিশ বেশ কয়েকবার গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর আগে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি।

    বুধবার রাজধানীর আবাসিক হোটেল ও বিভিন্ন মেসে অভিযান চালায় পুলিশ। রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে অভিযান চালায় নৌ পুলিশ। এ সময় অনেকের ঢাকায় আসার কারণসহ রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

    প্রত্যক্ষদর্শী সুমন ইসলাম জানান, রেলস্টেশনে আরও যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে তারা ঢাকায় কেন এসেছেন, তারা কোন দলের।

    তবে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের (কমলাপুর) ওসি ফেরদৌস আহমেদ বলেন, মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কিন্তু কারও রাজনৈতিক পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে না।

    সদরঘাট নৌ থানার ওসি শফিকুর রহমান জানান, সদরঘাট টার্মিনালের আওতাধীন এলাকায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

    পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার রাতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ১৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলিপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন বাদশা। পরে পুলিশ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফরিদ আহমেদ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জুয়েল রানাকে আটক করে। ইন্দুরকানি থানার ওসি এনামুল হক এ তথ্য জানান।

    সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নাশকতার মামলায় মঙ্গলবার রাতে বিএনপি-জামায়াতের তিন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন নুরনগর ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি মোবারক হোসেন, জামায়াতের কর্মী বাকী বিল্লাহ ও আকরাম হোসেন।

    কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গোপন বৈঠক থেকে উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমানসহ ২০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের ছয় সদস্য আহত হয়েছেন। তবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বুধবার বাতিসা এলাকায় অবস্থান নেন দলটির নেতাকর্মীরা।

    সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর সুরমা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। কোতয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, আলী আকবরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

    ময়মনসিংহে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক আকন্দ ওরফে লিটন ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা বিল্লাল হোসেনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, লিটনের বিরুদ্ধে ছয়টি ও বিল্লালের বিরুদ্ধে একটি ওয়ারেন্ট রয়েছে।

    মন্তব্য করুন