সারাদেশে আনন্দের ঢেউ
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনতার মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। সেই জনসভায় লাখো মানুষের একই স্লোগান ছিল- ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। শনিবার পদ্মা নদীর তীরে লাখ লাখ মানুষ। পদ্মা সেতু ঘিরে সারাদেশে আনন্দের জোয়ার বইছে। আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রোববার সকাল থেকে পদ্মা সেতুর গেট সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। রাতের আকাশ আতশবাজি দ্বারা আলোকিত হবে। দেশের পথে-প্রান্তরে ব্যানার ফেস্টুনে ভরা মরুভূমি।
রঙিন আলোয় রাজধানীর হাতিরঝিলকে দেওয়া হয়েছে নতুন রূপ। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে সাজানো হয়েছে পুরো এলাকা। দেশের প্রতিটি জেলার স্থানীয় প্রশাসন আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করছে। প্রতিটি জেলায় বড় পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা পুলিশও নানা কর্মসূচি পালন করছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার ডিসি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আনন্দ মিছিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা শহরের ফুটবল মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বড় পর্দায় সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, জেলা পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জেলার প্রতিটি থানা চত্বরে পদ্মা সেতু সংক্রান্ত ব্যানার ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে। পুলিশ সুপার অফিস ও থানা ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সকালে পুলিশ লাইনসে বড় পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখানো হবে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, পদ্মা সেতু থেকে শত মাইল দূরে হলেও চট্টগ্রাম নগরীতে উত্তেজনার কমতি নেই। উদ্বোধনকে ঘিরে বন্দরনগরীতে চলছে ভিন্ন উৎসব। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিএইচসি), জেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন, অঙ্গ ও প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নগরবাসীকে দেখাতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে বড় পর্দা। আতশবাজি প্রদর্শন, কনসার্টসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
খুলনা ব্যুরো জানায়, বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে খুলনা মহানগরী। প্রধান সড়কে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। এছাড়া শহরের সড়ক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সব ভবনে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেতু উদ্বোধনের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জেলা স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ রাতে আতশবাজি ও নান্দনিক লেজার শো অনুষ্ঠিত হবে।
ফরিদপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের প্রধান সড়কে সুন্দর তোরণ স্থাপন করা হয়েছে। মাহেন্দ্রক্ষণ স্মরণে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ সকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হবে। শেখ জামাল স্টেডিয়ামে পদ্মা সেতুর বড় রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল পদ্মা সেতুতে স্বরচিত কবিতা, গল্প ও ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি পালন করবে।