সাইবার হামলায় ‘অচল’ ইরানের পেট্রোল স্টেশন
সাইবার হামলা ইরানের জ্বালানি বিতরণ নেটওয়ার্ককে ব্যাহত করেছে।
ইরান সরকারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার এই সাইবার হামলা চালানো হয়।
ইরান সরকার বলছে, সাইবার হামলার পেছনে একটি দেশ রয়েছে। তবে তারা দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
‘প্রিডেটরি স্প্যারো’ নামে পরিচিত একটি দল সাইবার হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। তবে ইরানের শীর্ষ ইন্টারনেট নীতি-নির্ধারক এই হামলার পিছনে একজন নাম প্রকাশ না করা “রাষ্ট্রীয় অভিনেতা”কে অভিযুক্ত করেছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, এর উদ্দেশ্য ছিল ‘অসন্তোষ উসকে দেওয়া’।
দেশটির সরকার বলছে সাইবার হামলা ইরানের বিভিন্ন পেট্রোল কোম্পানির আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্কগুলিকে ব্যাহত করেছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, দেশের গাড়িচালকরা সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কম দামে পেট্রোল কিনতে পারে। তাই ভর্তুকিযুক্ত জ্বালানি কিনতে দেশের পেট্রোল স্টেশনগুলিতে সর্বদা দীর্ঘ লাইন ছিল।
সরকার জানিয়েছে, হ্যাকাররা রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরের হাইওয়েতে ডিজিটাল বিলবোর্ডও জব্দ করেছে। তারা একটি বার্তা পোস্ট করেছে যে ‘খামেনি, আমাদের জ্বালানি কোথায়?’
ইরানের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি বিতরণ কোম্পানির একজন মুখপাত্র বলেছেন, বুধবার সকালের মধ্যে দেশটির ৪,৩০০ পেট্রোল স্টেশনের মাত্র পাঁচ শতাংশ হ্যাকারদের হাতে মুক্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে প্রায় ৩,০০০ স্টেশন অ-ভর্তুকি মূল্যে ‘অফলাইনে’ জ্বালানি বিক্রি করতে সক্ষম।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবরোধ, ইরান সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দেশটির মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এ কারণেই ইরানের বেশিরভাগ মানুষ সরকার-ভর্তুকিযুক্ত জ্বালানির উপর নির্ভর করে।
বুধবার ইরানে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেন, “এটি এমন কিছু যা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং জনজীবনকে ব্যাহত করার জন্য করা হয়েছে।” তবে কর্তৃপক্ষের সতর্কতার কারণে এ অবস্থার সুযোগ নিতে পারেনি হ্যাকাররা।
ইরানের সুপ্রিম কাউন্সিল অফ সাইবারস্পেসের সেক্রেটারি আবুল হাসান ফিরুজাবাদী বলেছেন, হামলার পেছনে একটি দেশ রয়েছে। তবে ‘কোন দেশে এবং কীভাবে’তার ওপর হামলা হয়েছে তা বলার সময় এখনো আসেনি।
দেশটির আইন প্রয়োগকারী বাহিনী বিক্ষোভ দমন করতে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, সে সময় ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। তবে ইরানের কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
হ্যাকার গ্রুপটি আরও দাবি করেছে যে ইরানের জরুরি পরিষেবার কর্মকর্তাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল।
তারা বলে যে তারা ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এমন কিছু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা “খুব দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি” হতে পারে।
জুলাই মাসে ইরানের রেল নেটওয়ার্কে সাইবার হামলার পেছনে রয়েছে বলে দাবি করেছে এই গ্রুপ। সে সময় স্টেশনের বোর্ডে দেরি বা বাতিল বলে ভুল বার্তা দেখা যায়।