সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের জন্য পূর্বানুমতি লাগবে না: হাইকোর্ট
সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের পূর্ব অনুমতির বিধান বাতিল করেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা সংক্রান্ত আইনের ৪১ (১) ধারাকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এই বিধান সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এর আগে গত বুধবার ফৌজদারি মামলায় সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের অনুমতি দিয়ে তিন বছর আগে কার্যকর হওয়া ‘সরকারি চাকরি আইন’ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছে, এ ধরনের বিধান মানে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে অনাক্রম্যতা দেওয়া। শুধু তাই নয়, এ ধরনের বিধান দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। সরকারি চাকরিজীবী আইনে ‘কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি’র বিধানের বৈধতা নিয়ে বুধবার এক রুল শুনানিকালে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে আগাম অনুমতি নেওয়ার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালতে রিট আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ই ও সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, “কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় আদালত চার্জশিট গ্রহণ করার আগে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে যদি তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১৮ এর ধারা ৪১(১) এর অধীনে বিশেষ সুবিধার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে জনস্বার্থে রিট দায়ের করা হয়। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে একই ধরনের সুযোগ নিয়ে দুদক। আইনের ৩২(এ) ধারা প্রণয়ন করে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করেন এবং আদালত আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে ঘোষণা করেন। সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের একই সুযোগ প্রদানের জন্য ২০১৮ সালে প্রণীত উক্ত আইনের ৪১ (এ) ধারা আদালতের রায়ের পরিপন্থী।