সম্ভাবনা।ছাদে ছাদে ঝুলছে আঙুর
রবিউল হোসেন রবি। পড়াশোনার পাশাপাশি শখ হল ছাদে বাগান করা। চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় চারতলা ভবনে গড়ে তুলেছেন বিশাল ছাদ বাগান। এখানে রবি আঙ্গুর গাছ লাগিয়ে এক বছরে সাফল্য পান। তার গাছে এক বছরে তিনবার ফলন হয়েছে। এগুলো দেখতে আমদানিকৃত আঙ্গুরের মতো এবং মিষ্টি। একটি গাছে এখনও ১৫-১৬ থোকা আঙ্গুর ঝুলছে। পরিবার ও বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় রবি এখন মিষ্টি আঙুরের ফলন বাড়াতে আসল গাছ থেকে কলম করে চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গত বছর ঢাকা থেকে এক হাজার টাকায় একটি চারা এনে ছাদ বাগানে সেবা শুরু করি। এক বছরে তিনবার ফলন পেয়েছি। আমি প্রতিবার ১৫-১৬ গুচ্ছ থেকে প্রায় ১০ কেজি আঙ্গুর পেয়েছি। বিদেশি আঙুরের মতো স্বাদ বলে সবাই বলেছে। দুই মাস পর পর সার ও বিশেষ পরিচর্যা করতে হবে। আমার বাগানে আঙ্গুর ছাড়াও ৩০০ ধরনের ফল ও ফুলের গাছ রয়েছে।’ আঙুরের সাফল্যের পর বাণিজ্যিকভাবে বাগান সম্প্রসারণের কথা ভাবছেন রবি।
রবির মতো ব্যবসায়ী শওকত হোসেনও চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারে তার ছাদের বাগানে আঙুর গাছ লাগিয়ে সফলতা পেয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে, তিনি মালবেরি, ব্ল্যাকবেরি, সুপার নোভা, গ্রিন লং, মুন ড্রপ, লোরাস, মাস্কাট ব্লু, রেড গ্লোব, স্ট্রবেরি ফ্লেভার এবং বাইকুনু জাতের আঙ্গুর রোপণ করেছেন এবং ভাল ফলন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অন্যান্য গাছের মতো কৌতূহল মেটানোর জন্য একটি আঙুর গাছ লাগিয়েছি। তারপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন জাতের বিভিন্ন গাছ লাগান। কয়েকজন মারা গেলেও বাকি গাছে থোকায় থোকায় আঙুর ফলছে। আমরা দেখছি চট্টগ্রামের অনেকেই ছাদের বাগানে আঙ্গুর গাছ লাগিয়ে ভালো ফলন পাচ্ছেন।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর মোহরা এলাকার শাহী আরমান, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ডা. নুরুল হুদা, কল্পলোক আবাসিক এলাকা মো. আশরাফ, বায়েজিদ পলিটেকনিক এলাকার মাহবুবা, পতেঙ্গার মোঃ শাকিল, বোয়ালখালীর মোঃ শামস, নগরের খান মোজাফফর, নুরুন্নেছা ও নাছিমা ইয়ার তাদের ছাদের বাগানে আঙ্গুর গাছ লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছেন। তাদের বাগানে ঝুলছে আঙুরের থোকা।
চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার জানান, চট্টগ্রামে অনেকেই ছাদের বাগানে আঙুর চাষ করছেন। আমরা তাদের মাটি নির্বাচন, গাছের পরিচর্যা, সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। রোপণের এক থেকে দেড় বছর পর গাছে ফল ধরে। কেউ কেউ জানান, ফলন ভালো হলেও স্বাদ টক। আমরা তাদের সবরকম সাহায্য করছি। দেশে আঙ্গুর চাষে সফলতা পেলে ফল আমদানি করতে হয় না। ডলার বাঁচবে। কৃষি ও দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।