সব মামলা প্রত্যাহার করে তারেক রহমানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করে তাকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মরহুম আ স ম হান্নান শাহের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলার কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যে বলেন, “তারেক রহমানকে মামলা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে। তাকে আমরা এখনো দেশে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। নানা ধরনের টালবাহানা চলছে। আমরা কোনো ধরনের হয়রানি বরদাস্ত করব না। আমি। এই বৈঠক থেকে সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সব মামলা প্রত্যাহার করে তারেক রহমানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের মামলার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবদল ও প্রধান দলের বিরুদ্ধে করা সব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, এটাই এদেশের মানুষের দাবি। মিথ্যে মামলা প্রত্যাহার করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, যতক্ষণ না আমাদের ছেলেদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে কাল বিলম্ব না করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি সরকারকে যুক্তিসঙ্গত সময় দিতে হবে। যৌক্তিক সময়ের অর্থ এই নয় যে তারা আমাদেরকে আগের অভিজ্ঞতার মতো অন্য কিছুতে জড়িত করতে খুব বেশি সময় নেয়। এটা করা যাবে না। যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন হতে পারে, দেশের জন্য ততই মঙ্গল।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতি পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন করতে হয়। কারণ, আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করেছে। যে কারণে সব ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এই সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। সেই সাথে এদেশে অন্যান্য বিষয় আছে, জনগণের অধিকার, মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য দূর করতে খুব দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের আসন্ন দুর্গাপূজা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়েছে কিন্তু তার লোকজন ভেতরে আছে। তারা নানা ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আসছে হিন্দু ভাইদের দুর্গাপূজা। তারা এই দুর্গাপূজাকে ঘিরে নানা রকম অস্থির পরিবেশও তৈরি করতে পারে। আপনারা সতর্ক থাকবেন। আপনারা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সব সময় আপনাদের পাশে আছি। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে বাংলাদেশের সকল মানুষ আপনাদের পাশে থাকবে। দুর্গাপূজায় যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য তারা ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
বক্তৃতা শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, “গত ১৭ বছরে বিএনপির প্রায় এক হাজার মানুষ গুম হয়েছে। হাজারও মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেতা হান্নান শাহের লক্ষ্য, আকাঙ্ক্ষা, আদর্শ বাস্তবায়নে সজাগ থাকবেন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামব।
স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা জামায়াতের সুরা সদস্য মাওলানা সানাউল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।