• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    সব দাবি না মানলে সোমবার থেকে ট্রেন না চালানোর হুমকি দিয়েছেন রানিং স্টাফরা

    অর্থ মন্ত্রণালয় আগের নিয়ম অনুযায়ী চলমান ভাতা দিতে সম্মত হলেও রানিং স্টাফ হিসেবে পরিচিত ট্রেনের গার্ড, চালক ও কর্মচারীরা আগের দিনের মতো বুধবার আট ঘণ্টার বেশি কাজ করেননি। তাদের দাবি, শুধু ভাতা নয়; ১৬০ বছরের পুরনো নিয়মে ভাতার ৭৫ শতাংশ পেনশনে যোগ করতে হবে।

    চলমান কর্মীরা আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ না করায় অন্তত ১১টি মেইল, লোকাল এবং শাটল ট্রেন ব্যাহত হয়েছে। ব্যাহত হয়েছে মালবাহী ট্রেনও । বিভিন্ন রুটে চলা ট্রেনের এলোমেলো সময়সূচী ছাড়াও অনেক ট্রেনের যাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। দাবি না মানলে আগামী সোমবার থেকে ট্রেন চলাচল করবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রানিং কর্মীরা। তবে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী জানান, ১১টি নয়, মাত্র তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন বিঘ্নিত হয়েছে। সংকটে দুই ট্রেনের চালক দেরিতে ছেড়েছেন। এবং শুধুমাত্র একটি কমিউটার ট্রেন বন্ধ ছিল।

    দিনে ১০০ মাইলের বেশি ট্রন চালালে গার্ড, ড্রাইভার এবং রানিং স্টাফরা প্রতিদিন ১৮৬০ সাল থেকে  করে রানিং ভাতা পাচ্ছেন। গত ৪ নভেম্বর অর্থ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই সুবিধা আর দেওয়া হবে না। কোনো অবস্থাতেই ভাতা মাসিক বেতনের বেশি হতে পারবে না। ভাতা পেনশন যোগ করা হবে না. এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ট্রেনের চালক ও চলমান কর্মীরা আন্দোলন শুরু করেন। রেলওয়ের ইন্সটলেশন কোড অনুযায়ী চলমান ভাতা দেওয়া হবে বলে মঙ্গলবার রেল সচিবকে পাঠানো চিঠিতে অর্থ বিভাগ জানিয়েছে। রেলগাড়ির পরিচারিকারাও এই ভাতা পাবেন। তবে পেনশনে ভাতা যোগ করে হিসাব করার কোনো সুযোগ আইনে নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় এতে অসম্মতি জানায়।

    রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. রফিক চৌধুরী বলেন, রেলওয়ের এস্টাবলিশমেন্ট কোডে ভাতা ও পেনশনের সঙ্গে যোগ করার বিধান রয়েছে। কোডের একটি অংশ অনুযায়ী ভাতা দেওয়া হলে পেনশন যোগ করতে অসুবিধা কোথায়?

    সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, রেল সচিব তাদের আলোচনার জন্য ডেকেছেন। কিন্তু সাধারণ কর্মীরা তাতে রাজি নন। তাই আলোচনায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি।

    রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কর্মীরা কাজ না করার কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে পাঁচটি লোকাল ট্রেন, লালমনিরহাট থেকে তিনটি লোকাল ট্রেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি শাটলসহ ১১টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

    তবে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী এ তথ্য ভুল বলে জানান। চালক সংকটের কারণে বুধবার লালমনিরহাট থেকে বগুড়া কমিউটার ট্রেন তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। তিন ঘণ্টা দেরি হওয়ায় যাত্রীরা আসেননি। এ কারণে ইজারাদারের অনুরোধে ট্রেনটি বাতিল করা হয়েছে। চালক সংকটের কারণে গোপালগঞ্জ থেকে রাজশাহী লোকাল ট্রেন ৫০ মিনিট দেরিতে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে খুলনাগামী লোকাল ট্রেন ৪০ মিনিট দেরি করে। এ ছাড়া কোনো যাত্রীবাহী ট্রেনে কোনো সমস্যা হয়নি। যাত্রীবাহী ট্রেনকে অগ্রাধিকার দিয়ে মালবাহী ট্রেনে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সরদার শাহাদাত বলেন, মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের রানিং স্টাফ দাবির পক্ষে। তাদের পক্ষে রেলমন্ত্রী, রেল সচিব ও রেলওয়ের মহাপরিচালক অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন।

    এদিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বের কন্ট্রোল রুমে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামে চলাচলকারী ১০টি ট্রেনসহ বিভিন্ন রুটে ১৬টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বেশ কিছু পণ্যবাহী ও তেল ট্যাংকার ওয়াগনও আটকা পড়ে। মঙ্গলবার এমন চারটি ট্রেন চিটাগাং গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) ছাড়তে পারেনি।

    রেলওয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনছার আলী জানান, চলমান কর্মীদের চলাচল ও করোনার কারণে চট্টগ্রামে কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের যাতে স্টেশনে ফিরে যেতে না হয় সেজন্য আগাম ট্রেন যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।

    মন্তব্য করুন