সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন মা
একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে প্রায় পাগল আমেনা বেগম। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কোন সান্ত্বনা তাকে শান্ত করতে পাচ্ছে না। ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের দাবিতে বুধবার (৯ মার্চ) রাস্তায় নামেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই। আমি হাত জোড় করে বলছি, প্রধানমন্ত্রী আমার ছেলের হত্যার বিচার করবেন। ‘ এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মঙ্গলবার সকালে পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর পিলখানা এলাকার ডানকান হিলের মাদ্রাসা আলী বিন আবি তালিব (দঃ) থেকে ১৪ বছর বয়সী আরমানের লাশ উদ্ধার করা হয়। মাত্র ১ মাস আগে মাদ্রাসায় ভর্তি হন আরমান।
আরমান হত্যার বিচারের দাবিতে শুলকবাহার এলাকার বাসিন্দারা মাদ্রাসার পাশের পিলখানা রোডে সমাবেশ করেছে। সেই মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে তার মা এমন আর্জি জানান। পরে তার স্বজনরা মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ করে। পুলিশ তাদের চলে যেতে রাজি করায়।
আরমানের মৃত্যুর তিন দিন আগে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ এলাকার আছিয়ার রহমান হেফজখানা থেকে ইফতেকার মালেকুল মাসফি নামে সাত বছরের এক শিশুর লাশ পাওয়া যায়। নগরীর আলী বিন আবি তালিব মাদ্রাসায় এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা চলছে।
এদিকে ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় আরমানের বাবা আব্বাস উদ্দিন পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। মামলার জবানবন্দিতে তিনি অভিযোগ করেন, অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার ছেলেকে মাদ্রাসার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছে।
তবে তিনি জবানবন্দিতে আসামিদের নাম বলতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ। নাম জানায়নি পুলিশ। আব্বাস উদ্দিন বলেন, “আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। আমি মামলায় মাদ্রাসা পরিচালক আবদুল মান্নান ও শিক্ষক শোয়েবকে আসামি করতে চেয়েছিলাম। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগ অস্বীকার করে পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী মামলা হয়েছে। কে তার ছেলেকে মেরেছে তা তিনি জানেন না। এজন্য তিনি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করেছেন। এখন পর্যন্ত কেউ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তাই কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্তে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সোমবার বিকেলে মাদ্রাসার ছাদে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় আরমানের মৃত্যু হতে পারে। তদন্তে শরীরে নির্যাতনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।