সচিবালয় ঘিরে পার্কিং পরিকল্পনা।গাড়ির দখলে যাবে ওসমানী উদ্যান।
সচিবালয়ের প্রাণকেন্দ্রে এক হাজারেরও কম যানবাহন পার্ক করা যায়। যদিও সেখানে ৯ হাজারেরও বেশি গাড়ি প্রবেশ পাস (স্টিকার) রয়েছে! সুতরাং সচিবালয়ের অভ্যন্তরে কোনও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে সচিবালয়ের আশেপাশে একটি নতুন গাড়ি পার্কিংয়ের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা অনুমোদিত হলে রাজধানীর ওসমানী উদ্যান গাড়ির দখলে যাবে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের পূর্বদিকে ও মুক্তাগান ও জিরো পয়েন্ট এবং পুরান পল্টন জংশনের মধ্যবর্তী স্থানে ওসমানী উদ্যানে একটি দ্বিতল গাড়ি পার্ক স্থাপন করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে (ডিএসসিসি) একটি প্রস্তাব দিয়েছে।
সচিবালয় এলাকা নানা কারণে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ায় গত বছরের নভেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বর্তমানের রমনা এলাকা থেকে শেরেবাংলা নগরে স্থানান্তরের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সচিবালয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আসা-যাওয়া করতে যানজটেই নষ্ট হয় দীর্ঘসময়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সচিবালয়ে আটটি বিল্ডিং এবং তিনটি টিন শেড, ৩৮ টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং ১১ টি (ছোট এবং বড়) হোটেল বা ক্যান্টিন রয়েছে। এটিএম বুথ, একটি প্রেস রুম, একটি ডে-কেয়ার সেন্টার এবং একটি ক্লিনিকও রয়েছে। তবে আইন অনুযায়ী সচিবালয়ের কোনও ভবনের নিজস্ব গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও ডিএসসিসির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাকারী ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, সচিবালয় এলাকার চারপাশে ওসমানী উদ্যান ছাড়া সবুজ কোনো জায়গাই নেই। আর মুক্তাঙ্গন হলো মুক্ত অঙ্গন। এগুলো জনগণের সম্পদ। সরকারি আমলারা কোনোভাবেই এগুলোর দখলে নিতে পারে না। জনগণের অধিকার হরণের পাঁয়তারা করলে জনগণ হাইকোর্টে রিট করতে পারে। তিনি বলেন, ভবনের সঙ্গে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা অমান্য করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সরকার এটি নিজেই মানছে না। আমলাদের গাড়ির চাপে পুরো সচিবালয় এখন ভারাক্রান্ত। সচিবালয়ের চারপাশের রাস্তা অস্থায়ী পার্কিং জোনে পরিণত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য বিকল্প পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। বায়তুল মোকাররমে সচিবালয়ের জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, ওসমানী উদ্যান ও মুক্তাঙ্গনে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা অনেক বড় পরিকল্পনা। এ বিষয়ে আরও চিন্তা করতে হবে।