শেয়ারবাজারে রক্তক্ষরণ
শেয়ারবাজারে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ক্রমাগত দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা বিপর্যস্ত, তারল্য সংকট বেড়েছে এবং নতুন বিনিয়োগ আসছে না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম তলানিতে নেমেছে, যার বড় প্রভাব পড়েছে মূল্য সূচক ও বাজার মূলধনে। কারসাজি ও অনিয়মের চক্র ভাঙতে পারছে না এই পুঁজিবাজার। লাভের আশায় এসে পুঁজি হারিয়ে ঘরে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও সুশাসন না থাকায় আস্থার সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিনিয়োগকারীরা লোকসানে শেয়ার বিক্রি করছেন, যা বাজারকে আরও দুর্বল করছে। নতুন বিনিয়োগ না আসায় বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরনো বিনিয়োগকারীদের হতাশা ছড়িয়ে পড়ছে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও। ফলে যারা বিনিয়োগ করতে পারছেন তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ না করে সরকারি সঞ্চয়পত্র কিনে বা ব্যাংকে আমানত রেখে যে ‘রিটার্ন’ পাচ্ছেন তাতেই সন্তুষ্ট।
শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাজারে ছোট, মাঝারি, বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীই এখন হতাশ। কেউ নতুন টাকা বিনিয়োগ করতে না চাইলেও অনেকে লোকসান স্বীকার করে বাজার ছাড়ছেন।
সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকর উদ্যোগের অভাবে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠছে। গত আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিনিয়োগকারীরা নতুন আশার আলো দেখলেও সেই আশা বাস্তবায়িত হয়নি। পরিবর্তিত সরকারও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের চার দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৭৮৬ পয়েন্ট বাড়লেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গত সাত মাসে বাজার আগের অবস্থানে ফিরে এসেছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ সম্প্রতি এক জরিপে দেখিয়েছে যে বিএসইসির নতুন নেতৃত্বের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমেছে। জরিপ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ বিএসইসির বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখেছেন, ৪৯.৫ শতাংশ সম্পূর্ণরূপে আস্থা হারিয়েছেন এবং ৩৭ শতাংশের আংশিক আস্থা রয়েছে।
Do Follow: greenbanglaonline24