শেয়ারবাজারে দরপতন থেমে নেই
রোববারও সপ্তাহের লেনদেন শুরু হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে ২৮৮টির দর কমেছে। বেশির ভাগ শেয়ারেই ক্রেতার অভাব দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স 65 পয়েন্ট হারিয়ে 6061 পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সূচক পতনের হার ১ শতাংশের বেশি। এ নিয়ে টানা নবম দিনে শেয়ারদর ও সূচক কমেছে।
গত সপ্তাহের পাঁচ দিনের পতনে সূচকটি ১৯৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। আর গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা আট দিনে মোট ২৪০ পয়েন্ট হারিয়েছে।
আজ লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় প্রধান শেয়ারবাজারে ২২৭ কোটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
প্রধান শেয়ারবাজারে এমন পতনের বিপরীতে ছোট পুঁজির কোম্পানিগুলোর বিকল্প শেয়ারবাজার এসএমই বোর্ডের সূচক এখনো বাড়ছে। বৃহস্পতিবারের তুলনায় সূচকটি ২২ পয়েন্ট বেড়ে ২০০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রধান পুঁজিবাজারের বর্তমান দর পতনের মূল কারণ সাম্প্রতিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে অর্থনীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হওয়া আতঙ্ক। বিশেষ করে লোডশেডিংয়ের কারণে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার খবরে কোম্পানিগুলোর আয় নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া শেয়ার বিক্রির জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিয়ত চাপ রয়েছে। তবে শেয়ারবাজারের স্টেকহোল্ডাররা শেয়ারের কারসাজিকে দরপতনের সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন।
তারা বলেছে, জুলাই ২০২০ থেকে অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পিছনে ছিল শেয়ার কারসাজি।
ওই কারসাজির মূল হোতা ছিলেন সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরোসহ আরও অনেকে। তারা সার্কুলার লেনদেনের মাধ্যমে নিজেদের জন্য একটি কৃত্রিম বাজার তৈরি করেছে এবং তাদের শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে। এরপর শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাদের কারসাজি ফাঁস হওয়ার পর তারা এখন প্রধান শেয়ারবাজারে নিষ্ক্রিয়। এ কারণে দাম কমছে। তবে মূল শেয়ারবাজার ছেড়ে হিরো সার্কেলসহ আরও দুটি পুরনো ম্যানিপুলেশন সার্কেল এখন ছোট পুঁজির কোম্পানিগুলোর জন্য তৈরি বিকল্প শেয়ারবাজার এসএমই প্ল্যাটফর্মে কারসাজি করছে।
এ কারণে প্রধান পুঁজিবাজারে শেয়ারদর ক্রমাগত কমছে। অন্যদিকে এসএমই বোর্ডের শেয়ারের দাম বাড়ছে।
গত চার মাসে, বাজারের ডিএসইএক্স সূচক ৬৮০০ পয়েন্ট থেকে ৬০০০ পয়েন্টে নেমেছে, তবে একই সময়ে, এসএমই বোর্ড সূচক ডিএসএমইএক্স ৫৯৩ পয়েন্ট থেকে ২১০০ পয়েন্টে বেড়েছে।