শপথ নিলেন মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা
শপথ গ্রহণের পর দ্বাদশ মন্ত্রিসভার সদস্যরা ৩৬ মন্ত্রীর দপ্তর বণ্টনের শপথ নেন। নিয়মানুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পরে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান।
গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। এরপর নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এই শপথের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় আওয়ামী লীগ। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন। এদিকে পঞ্চম মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া অষ্টমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৮৬ সালের প্রথম নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে অংশগ্রহণ করেন। এরপর থেকে এ আসনে প্রতিবারই জয়ী হয়েছেন তিনি। অষ্টমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন ও পুরাতন মন্ত্রিসভায় ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।
মন্ত্রীরা হলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া তিনি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ। মাহমুদ হুমায়ুন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, কৃষিমন্ত্রী আবদুল শহীদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, গণপূর্ত ও গৃহায়ণমন্ত্রী আর এ এম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ফারুক চৌধুরী প্রমুখ। এবং প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান, ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, রেলমন্ত্রী জিল্লুর হাকিম, পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ড. দীপু মনি, পরিবেশ ও জলবায়ুমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাঙ্গীর কবির। নানক, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এ ছাড়া স্থপতি ইয়াফেস ওসমানকে টেকনোক্র্যাট কোটায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় ড.সামন্ত লাল সেনকে।
প্রতিমন্ত্রীরা হলেন- মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বেগম সিমিন হোসেন (রিমি), বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিভাগের জুনাইদ আহমেদ পলক, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জাহিদ ফারুক, তথ্য ও সম্প্রচার মুহাম্মদ আলী আরাফাত, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের, মো. মহিববুর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শফিকুর রহমান চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. টিটু), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় রুমানা আলী তুষী। বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য দরবার হলে এক হাজার অতিথির বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সামনের সারির আসনগুলির নাম ট্যাগ দেওয়া আছে। দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথগ্রহণ মঞ্চ ফুল দিয়ে সাজানো হয়।
একসাথে শপথ গ্রহণের সুবিধার্থে একটি মাইক স্ট্যান্ড রাখা হয়েছে। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর বঙ্গভবনের মাঠে আপ্যায়নের আয়োজন করা হয়। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অতিথিদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও তার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিকী ববি, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রমুখ।