জাতীয়

রোজা শুরুতেই যানজটে ভোগাবে

রোজা শুরু হয়েছে। সংযমের এই মাসে অফিস-আদালতসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে দোকানপাট। যানজট এড়াতে সকাল থেকে ধাপে ধাপে সংগঠনের কার্যক্রম শুরু হলেও রমজানে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই সবকিছু শুরু হবে। এ প্রেক্ষাপটে রমজানে এখন যানজট পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজধানীর মানুষ। সব মহল থেকে যানজটের কথা বলা হলেও কোনো সমাধান হচ্ছে না।

যানজট নিয়ন্ত্রণে ২০১০ সাল থেকে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গত দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে করোনা। গত ১৬ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরুর পর থেকে যানজটে হতাশ রাজধানী। উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে সময় লাগে প্রায় চার ঘণ্টা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ তাদের দুর্ভোগের কথা জানাচ্ছেন।

রোজা মহাসড়কে যানজট নিরসনে নতুন মাত্রা দেবে। আজ থেকে সরকারি অফিস সকাল ৯টায় শুরু হয়ে চলবে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। ব্যাংক, বীমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এক শিফটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে দুপুর ১টায় ছাড়বে। দুই শিফটের স্কুলের সকালের শাখা সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে ১১টা ১০ মিনিটে শেষ হবে এবং দিবা শাখা সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হবে এবং চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

যানজট রোধে ২০১০ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সকাল সাড়ে ৮টায়, অফিস-আদালত সকাল ৯টায় এবং ব্যাংক বীমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান সকাল ১০টায়। যাতে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের গাড়ি চালানোর সময় আলাদা হয়। এবার সবাইকে একসঙ্গে রাস্তায় নামতে হবে। এতে যানজট বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস শুরুর পর থেকে রাজধানীতে যানজট পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গণপরিবহন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, গত দুই বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় রাজধানীতে যানজট কিছুটা কম হয়েছে। অনেকেই ভেবেছিলেন যানজট কেটে গেছে। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ খুলতেই এই ভুল ভাঙল। আসলে কোনো উন্নতি হয়নি।

শিক্ষামন্ত্রী মো. দীপু মনি গত শুক্রবার বলেছিলেন, করোনার কারণে এই রমজানে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে না। সামনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। ক্লাস না হলে সিলেবাস শেষ হবে না। পরীক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (এআরআই) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, পৃথিবীর কোথাও এমন অপরিকল্পিত পরিবহন ব্যবস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। এ কারণে যানজট ঠেকাতে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। পৃথিবীর আর কোথাও এমন নজির নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীতে যানজটের অন্যতম কারণ স্কুলে আসা প্রাইভেটকার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর মানে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা নেই।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বিভিন্ন এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের কাজ করছে। স্টেশনের কাজ চলায় বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও প্রেসক্লাব এলাকার রাস্তাগুলো সরু হয়ে পড়েছে। প্রেসক্লাবের সামনের আট লেন সড়কে স্টেশনের নিচে মাত্র চার লেন খোলা। ওয়েলকাম পরিবহনের চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, যানজট থেকে জীবন বেরিয়ে আসছে। গুলিস্তান-মিরপুর এখন তিন ঘণ্টার যাত্রা।

মন্তব্য করুন