রূপগঞ্জে কারখানায় আগুন।তদন্ত কমিটি সরকারি সংস্থা এবং কারখানা মালিকদের অবহেলার সন্ধান পেয়েছে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে সরকারি সংস্থা ও কারখানা মালিকদের অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্তে কারখানার বিভিন্ন অনিয়মের কথাও জানা গেছে। কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রম বিভাগ এবং কারখানা ও সংস্থা পরিদর্শন বিভাগ পর্যাপ্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেনি। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে ২০ টি সুপারিশ করা হয়েছে।
রোববার রাতে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সামগ্রিক) শামীম বেপারীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ৪৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে কারখানার সংশ্লিষ্ট বিভাগের অবহেলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কারখানা বিভাগের অবহেলার বিষয়ে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বলেন, কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো সার্টিফিকেট নেই এবং বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না। না, ফায়ার সার্ভিসের এনওসি। অগ্নি নিরাপত্তা ছিল না। তদন্তে আরও বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনিয়ম পাওয়া গেছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ২০ টি সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের প্রথম সুপারিশ ছিল শিশুশ্রম। এ ধরনের কারখানায় শিশুশ্রম বন্ধ রাখতে। দ্বিতীয়ত, যারা মারা গেছে তাদের শ্রম আইন অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং যারা আহত হয়েছে তাদের নিয়োগকর্তার দেওয়া আড়াই লাখ টাকা যেন প্রধান করে। বিল্ডিং কোড মেনে চলা, অধিক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখার এবং কারখানায় প্রশিক্ষিত অগ্নিনির্বাপক রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, কারখানার নিচতলায় কেন্দ্রীয় গুদামের কম্প্রেসার রুমের একপাশে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে তা উঠে এসেছে। তদন্ত কমিটি কারখানার প্রতিটি তলায় নেট দিয়ে বাধার প্রমাণ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, ৮ জুলাই রূপগঞ্জের হাশেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন মারা যান। ইতিমধ্যেই ৪৫ জনের মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে এবং মৃতদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।