রাসুল (সা.) যখন সুরমা ব্যবহার করতেন
সুরমা একটি খনিজ পদার্থ। এর প্রধান উপাদান হল সীসা সালফাইড। সীসা সালফাইড পিষে সুরমা তৈরি করা হয়। মাস্ক পাউডার, জমজমের পানি ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে চোখের বিভিন্ন রোগ নিরাময় হয়।
সুরমা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই বৈধ। শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়; বরং সুরমা ব্যবহার করতে হবে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণে। যাতে চোখের উপকারের পাশাপাশি সুন্নতও করা হয়। কারণ রাসুল (সা.) নিজে সুরমা প্রয়োগ করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে উৎসাহিত করেছেন।
এমনকি নবীজির সুরমাদানীও ছিল। হাদিসে সুরমার বেশ কিছু উপকারিতা বর্ণিত হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা ইসমিদ সুরমা ব্যবহার কর। কারণ এটি চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং পরিষ্কার করে এবং আরও ভ্রু তৈরি করে।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) আরো বলেন যে, নবী (সাঃ) এর একটি সুরমাদানী ছিল। প্রতি রাতে (শুতে যাওয়ার আগে) ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন। (শামাঈল তিরমিযী, হাদীসঃ ৪১)
উল্লেখিত হাদিসে সুরমা ব্যবহারের উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) কীভাবে চোখে সুরমা লাগাতেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে সুরমা: ১. সংক্রামক রোগজীবাণু ধ্বংস করে।
২. চোখে প্রবেশ করা ধুলো দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ৩. অত্যন্ত কার্যকর জীবাণুনাশক. ৪. চোখের জ্বালা ন্যূনতম।
তখন সুরমা করতেন
রাসুল (সাঃ) রাতে ঘুমানোর আগে সুরমা ব্যবহার করতেন এবং অন্যদেরকেও তা ব্যবহার করতে উৎসাহিত করতেন। জাবির (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ঘুমানোর সময় অবশ্যই ইসমিদ সুরমা ব্যবহার করতে হবে। কারণ এতে চোখের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ভ্রুও বাড়ে।’ (শামায়েল তিরমিযী, হাদীসঃ ৪২)
অবশেষে, নবী (সাঃ) সুরমা ব্যবহার করেছেন, এটি হাদিস দ্বারা নিশ্চিত। কিন্তু এটা ইবাদতের সাথে সম্পর্কিত সুন্নত নয়। এটি একটি সুন্নত যা অনুশীলনের সাথে জড়িত। তাই কেউ সুরমা ব্যবহার না করলে তাকে দায়ী করা যায় না।
আর জেনে রাখা দরকার নারী পুরুষ উভয়েই সুরমা প্রয়োগ করতে পারবে। পুরুষরা চোখের মেকআপ পরবে নবীর মডেল হিসেবে, সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নয়। আর মেয়েরা চোখের উপকারে ও স্বামীর কাছে সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য সুরমা লাগাবে।
আর এটাও জানা দরকার যে, অযু করার সময় সুরমার কালো দাগ থেকে গেলে অযু করতে কোন অসুবিধা হবে না।