রাজাপুরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পাঁচতলা বাড়ি নিয়ে তোলপাড়
ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেলের তৈরি বিলাসবহুল ৫ তলা বাড়ি নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই বাড়ির একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এরপর শুরু হয় গুঞ্জন। তবে তিনি এ সম্পত্তি ও বাড়ি বৈধভাবে করেছেন বলে দাবি করেন।
রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের দহরশঙ্কর গ্রামের বাসিন্দা মো. রাসেল। প্রশ্ন হচ্ছে রাজাপুরে চাকরি করে তিনি কীভাবে এই বিপুল সম্পদের মালিক হলেন? এই টাকার আয়ের উৎস কী? স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এখান থেকে অবৈধভাবে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাছ কেটে বিক্রি, রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, সরকারি বরাদ্দকৃত গাড়ির অপব্যবহার, সরকারি বাসভবনের দুটি ফ্ল্যাটের একটির ভাড়া কেটে নেওয়া, কমপ্লেক্সে রোগীর কাছ থেকে ফি নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বাসস্থান, তার ড্রাইভারের জরুরী বিভাগে রোগীদের সেবা প্রদান।
এসব অভিযোগের ভিডিও প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে দেখা যায়। সম্প্রতি বরিশালে তার পাঁচতলা বাড়ির একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পর এসব অভিযোগ সামনে আসে।
রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেল বলেন, এটা আমার বাড়ি। আমি কি বাড়ি করতে পারি না? তবে তার বাড়ির ভাইরাল ছবির জন্য রাজাপুরের সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসান হাবিব সোহাগকে দায়ী করেন তিনি। তার ক্লিনিকে ডা. রাসেল চেম্বার ট্যাক্স না পাওয়ায় এসব করা হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে নানা অনিয়মের কারণে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ায় সোহাগ ক্লিনিকের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র করছেন ক্লিনিক মালিক। তিনি জানান, ব্যাংক ও ব্র্যাকের ঋণ এবং এক বন্ধুর কাছ থেকে ধার করা টাকায় তিনি বাড়িটি নির্মাণ করেছেন। সম্পত্তিতে তার স্ত্রীরও অংশ রয়েছে। আয়কর, ভ্যাটসহ সরকারের যাবতীয় নিয়মকানুন বৈধ পথে। রাসেল নিজেকে সম্পত্তি ও বাড়ির মালিক বলে দাবি করেন।
তবে রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ জানান, তিনি (ডা. রাসেল) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নন। আমার বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এখানে অল্প পরিসরে রোগী দেখেন। ডাঃ রাসেল সরকারি বাস ভবনের চেম্বারে গিয়ে ৫০০ টাকা দেন। তিনি আমার ক্লিনিকের প্যাথলজি রিপোর্ট দেখেন না। তাকে আমার ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এখন তার বিলাসবহুল বাড়ির ছবি ভাইরাল হওয়ায় তিনি আজেবাজে কথা বলছেন।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ড. রাসেলের বাড়ি ও সম্পত্তি সম্পর্কে ঝালকাঠি সিভিল সার্জন ডা. সিহাব উদ্দিন বলেন, ফেসবুকেও দেখেছি। সে কিভাবে করেছে তা তদন্ত করার দায়িত্ব আমার নয়। যে কেউ বাড়ি বা সম্পত্তি বানাতে পারে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।