• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    রাজনীতি হঠাৎ সরব।বিএনপিকে ছাড় সংবিধানের ভেতর থেকেই।আওয়ামী লীগ

    আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে সংবিধানের মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় ছাড় দেবে আওয়ামী লীগ। এ জন্য সবার আগে বিএনপিকে বিনা বাধায় সভা-সমাবেশ করার পরিবেশ তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও নিরপেক্ষ অবস্থানে দেখতে চায় সংগঠনটি।

    আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহ ও ইতিবাচক বক্তব্যের পর রোববার দলের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করেন। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার রাজনৈতিক কৌশল নিয়েও কথা বলেছেন তারা। কেউ কেউ গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

    শনিবার গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিসহ সব দলকে নিয়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর এ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরাও। তবে কোন প্রক্রিয়ায় বিএনপিকে নির্বাচনে আনা সম্ভব হবে তা প্রায় সবাই জানতে চান।

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এরই মধ্যে সভা-সমাবেশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে বিএনপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে তারা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারবে। বিএনপির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. তিনি বলেন, নির্বাচনের এখনো দেড় বছর বাকি। সময় হলে সব দেখা যাবে।

    ওবায়দুল কাদের জানান, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি বিএনপির রাইট-সুযোগ নয়। তবে আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। তাই তারা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই।

    তবে সরকারের পদত্যাগ ছাড়া নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে চাননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যকে মাঠ গরম রাখার কৌশল হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নেতারা। তাদের মতে, রাজনীতিতে দর কষাকষি থাকতে হবে। একপর্যায়ে সমঝোতা হবে। বিএনপিও নির্বাচনে আসবে।

    আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সংবিধানের মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় ছাড় দেওয়া হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার সবই করা হবে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার সুযোগ নিতে হবে। তবে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বিএনপির। এটা অসাংবিধানিক।

    আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দলের কৌশল নিয়ে কথা বলতে চান না আওয়ামী লীগ নেতারা। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি দেখে কৌশল নির্ধারণ করা হবে। সেই কৌশলে অনেক কিছু থাকবে। এর সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোও জড়িত থাকবে। এ ছাড়া আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

    এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই আলোচনার বিপক্ষে নয়। যেকোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আওয়ামী লীগ।

    আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কৌশলের প্রস্তাব করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খান। তিনি বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সংবিধানের মধ্যে থেকেই ছাড় দেওয়া হবে। এবং কেবল সময়ই বলে দেবে কী করতে হবে। শর্তের পরিপ্রেক্ষিতে কৌশলও নির্ধারণ করা হবে। রাজনীতিতে দর কষাকষি করতে হবে। তবে একপর্যায়ে সমঝোতা হবে। বিএনপিও নির্বাচনে আসবে।

    মন্তব্য করুন