• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    রাজনীতিতে ফের উত্তাপ।আ’লীগ আর কোনো ছাড় দেবে না

    আগামী শুক্রবার রাজধানীতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর একযোগে জনসভাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ঢাকা শহরকে মিছিলের নগরীতে পরিণত করতে চায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচিতে না দিলেও কোনো ছাড় দেবে না। ওইদিন রাজপথে সতর্ক থাকবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় সহিংসতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
    আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি না দিলেও আগামী শুক্রবার বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচিতে কোনো ছাড় দেবে না। ১০ ডিসেম্বরের মতো এবারও রাজধানীর রাজপথে সতর্ক অবস্থান নেবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। সম্ভাব্য নাশকতার আশঙ্কা দেখা গেলেই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নেতাকর্মীরা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে।
    নেতারা বলছেন, বিএনপি ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশের ডাক দিলে আবারও সংঘর্ষ ও সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। বিএনপির সমমনা জোট ও দলগুলোও রাজধানীতে পৃথক গণসমাবেশের আয়োজন করায় সংঘর্ষ-সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। এর আগে ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচির ফলে এক জনের মৃত্যুসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় বিএনপির কর্মসূচিতে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
    নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানান, গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপি যে বিভাগীয় গণসমাবেশ করেছে তা একটি এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এবার তাদের গণসমাবেশ কর্মসূচি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হলেও বিভিন্ন পথ ঘুরে বাংলামটরে গিয়ে শেষ হবে। আর ‘যুগপত আন্দোলন’-এর অংশ হিসেবে বিএনপির সমমনা সাতদলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ২০ দলের মধ্যে গঠিত ১২ দলীয় জোট, জামায়াত ও এলডিপি রাজধানীর বিভিন্ন স্পট ও রুটে গণসমাবেশ করবে। ফলে এ কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকার সব সড়ক দখল করতে চায় বিএনপি ও তার সহযোগীরা। এ ছাড়া গণমিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা রাস্তায় ভাঙচুর, লাঞ্ছিত ও পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় লিপ্ত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
    এমতাবস্থায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ১০ ডিসেম্বর যেভাবে রাজপথ থেকে বিএনপিকে মোকাবিলা করেছিল, শুক্রবারও একই কৌশলে তাদের মোকাবিলা করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নেতাকর্মীরা ওইদিন রাজপথে সতর্ক থাকবেন। ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের পাড়া-মহল্লা, অলি-গলিতে এবং ছোট-বড় সড়কে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছড়িয়ে থাকবে।
    এদিকে সোমবার দলের নবনির্বাচিত প্রেসিডিয়াম বৈঠকে বিএনপির কর্মসূচি মোকাবেলায় সব স্তরের নেতাকর্মীদের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন এবং বিএনপির কর্মসূচি মোকাবিলায় কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বিষয়ে কিছু নির্দেশনাও দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।
    বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে অপশক্তি আবারও গণমিছিলের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ৩০ তারিখ সারাদেশে আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকবে। হামলা হলে আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি করবে কিনা পরিস্থিতিই বলে দেবে।
    আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাকে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়বে এমন পরিস্থিতি দেশে নেই। এ অবস্থায় আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি। আর জনগণের জানমালের নিরাপত্তা যে কোনো সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বও আওয়ামী লীগের। সেই দায়িত্ব পালনে সরকার ও দল যা যা করা দরকার তাই করবে।
    আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপির কর্মসূচি মানেই সংঘাত- নাশকতা-সহিংসতা। বিএনপি যাতে আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনগণের শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ সর্বদা মাঠে থাকবে।
    বিএনপি ও সমমনাদের গণমিছিলকে ঘিরে সম্ভাব্য ‘নাশকতা’ মোকাবেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। গণমিছিলের দিন শুক্রবার সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণের প্রতিটি ওয়ার্ডের রাজপথে সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

    মন্তব্য করুন