• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    রাজধানীতে ফের জনস্রোত দেখালো আওয়ামী লীগ

    আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ধারাবাহিকতায় আরেকটি বড় শোডাউন দেখল রাজধানীবাসী। শনিবার বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ গতকাল ঢাকার মধ্য বাড্ডা উলুপে সমাবেশ করেছে। সরকারি ছুটির দিন বিকেলে লাখ লাখ নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

    এর আগে বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসভাসহ আন্দোলন কর্মসূচির দিন ঢাকায় বা অন্যত্র আওয়ামী লীগের বড় ধরনের সমাবেশের খবর পাওয়া গেছে। রংপুরে বিএনপির গণসমাবেশের দিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে বিশাল শোডাউন করেছে ক্ষমতাসীন দল। আর গতকাল কুমিল্লায় মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পাশাপাশি রাজধানীতেও বিশাল শোডাউন করেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা।

    রাজধানীর মধ্যবাড্ডা উলুপে বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য-সহিংসতা ও আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল লোক নিয়োগ করে আমাদের ভয় দেখায়! বিএনপিকে এখন ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে রাজপথ দখল করবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। তাই ডিসেম্বরে খেলার জন্য প্রস্তুত হন।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদালত বাতিল করেছে, তা জাদুঘরে গেছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত তাড়ানো। নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় আসার চিন্তা ভুলে যান।

    ঢাকার শান্তি সমাবেশে বিপুল জনসমাগম ছিল দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখানে এসে বরিশালের কথা ভাবছি। বিএনপি কয়েকদিন ধরে টাকা দিয়ে লোক জড়ো করছে। ফখরুল সাহেব, বরিশালে দুই চারদিন আগে ছয় জেলার মানুষ টাকা নিয়ে জড়ো হয়েছেন। আর এখানে ছয়জন পুলিশ সদস্য। বরিশালের চেয়ে দ্বিগুণ মানুষ এখানে।

    সমাবেশে সভাপতিত্বকারী আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এতে একজন আহত হলে বিএনপিকে শতাধিক মানুষের আঘাত নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশ তারা যতই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করুক না কেন আওয়ামী লীগ তা সফল হতে দেবে না।

    আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, সমাবেশের নামে আবারও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে দেখতে হবে। সেটাই বিএনপি নেতার উপযুক্ত জায়গা। তারিক রহমানের নির্দেশে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, ঢাকাবাসী তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।

    ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য একেএম রহমতউল্লাহ এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি ওয়াকিল উদ্দিন, আব্দুল কাদের খানসহ সংগঠকরা। সম্পাদক আজিজুল হক রানা প্রমুখ।

    বিকাল ৩টায় সমাবেশের কথা থাকলেও দুপুর থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা, বনানী, গুলশান, বাড্ডা, ভাটারা, রামপুরা, হাতিরঝিল, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা একের পর এক বিশাল মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। মধ্যবদ্দা ইউলুপের কাছে রাস্তার খোলা ট্রাক প্ল্যাটফর্মে নেতারা বক্তব্য রাখেন। মেরুল বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা ও শাহজাদপুরেও এ মঞ্চের সামনে ও পেছনে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। বিকেলের দিকে রামপুরা ব্রিজ থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত এলাকা ছিল মানুষের ভিড়ে।

    সমাবেশকে ঘিরে তীব্র যানজট : দুপুর আড়াইটার দিকে রামপুরা-কুড়িল সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় ট্রাফিক পুলিশ। এ সময় গাড়িগুলো রামপুরা ব্রিজ থেকে হাতিরঝিলের দিকে মোড় নেয়। বাকি যানবাহন সেখানে Uloop ব্যবহার করে ফিরে. অন্যদিকে কুড়িল বিশ্বরোডের দিক থেকে আসা যানবাহনগুলোকে নতুন বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

    এ অবস্থায় সমাবেশস্থলের আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

    মন্তব্য করুন