রহিমার অপহরণের প্রমাণ পায়নি পিবিআই, ফাঁসছেন পরিবারের সদস্যরা।জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন আটকরা
খুলনায় রহিমা বেগম অপহরণ মামলার তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করে ওই নারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তার অপহরণের কোনো প্রমাণ পায়নি। বরং জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিবেশীদের ফাঁসানোর জন্য আত্মগোপনের প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
এতে রহিমা ও তার সন্তানদের ফাঁসিয়ে গুমের নাটক সাজিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করা হচ্ছে। আদালতে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের মুক্তি ও বাদীর শাস্তি দাবি করেন ভুক্তভোগীদের স্বজনরা। একই সঙ্গে রহিমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার ঘোষণা দেন তারা।
পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, রহিমার বক্তব্য ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দি বিশ্লেষণ করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে তার অপহরণের মিথ্যা প্রমাণ রয়েছে। এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হক জানান, গত ২২শে সেপ্টেম্বর রহিমা জন্ম সনদ সংগ্রহ করতে আসলে তার বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া যায়। বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি হতবাক হয়ে যান। পরে জানা যায়, রহিমা আসলে এই এলাকার বাসিন্দা নয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান জানান, মঙ্গলবার বোয়ালমারীর ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও আশ্রয়দাতা আব্দুল কুদ্দুসের পরিবারের সদস্যসহ অন্তত ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন তিনি। কুদ্দুসের পরিবারের সদস্যরা জানান, রহিমা অপহরণের বিষয়টি তাদের জানায়নি, বরং তার স্বামী বেলাল হাওলাদার ও তার সন্তানদের সঙ্গে তার খারাপ সম্পর্ক ছিল। এ কারণে তিনি সেখানে যান। কিন্তু সবই ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং তার স্বামী ও সন্তানেরা বিষয়টি জানতেন। তদন্ত শেষে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে গ্রেফতারকৃতদের ছেড়ে দেওয়া হবে। তারা চাইলে রহিমা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে।
গত ২৭ আগস্ট খুলনার মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হন রহিমা। পরদিন অপহরণের অভিযোগে তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমাকে উদ্ধার করা হয়।