রাজনীতি

যুব সমাবেশকে ঘিরে বিএনপিতে নব উচ্ছ্বাস।

রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নতুন উদ্যমে ‘যুব সমাবেশ’ নিয়ে মাঠে নামছে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে এই আয়োজনে নেতৃত্ব দেবে তরুণ প্রজন্মকে ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সক্রিয় করতে। তরুণদের জাগিয়ে তুলতে বিএনপির নতুন কর্মসূচি শুরু হবে আগামী রোববার থেকে। দেশের বড় বড় শহর ও নগরে এ সমাবেশ চলবে।

‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যে সমাবেশ নিয়ে স্লোগানে প্রথম দিনে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিশাল সমাবেশ করে চমক দেখাতে চায় দলটি। এর জন্য নেতারা প্রস্তুত; নানা কৌশল নেওয়া হচ্ছে, নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। গঠন করা হয়েছে সাংগঠনিক দল। সমাবেশ সফল করতে জেলা-উপজেলা থেকে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীরা সরব হচ্ছেন। তরুণ সমাজকে উজ্জীবিত করতে ৫০ লাখ লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রামের পর ১৭ জুন বগুড়ায় (রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ একসঙ্গে), ৭ জুলাই খুলনায়, ১৫ জুলাই বরিশাল, ২২ জুলাই সিলেট এবং ২৯ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করবে বিএনপি।

যুব সমাবেশকে ঘিরে মঙ্গলবার দিনব্যাপী বৈঠক করেন তিনটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। পৃথক সভায় সমাবেশ সফল করতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, কর্মসংস্থানও নেই। আওয়ামী লীগ না করলে এখন কেউ চাকরি পাবে না। দেশের বেকারদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত যুবক যারা কর্মসংস্থান পায় না। ফলে সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ে এবং পথভ্রষ্ট হয়। দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে বিএনপির চলমান আন্দোলনে তরুণদের সম্পৃক্ত করা খুবই প্রাসঙ্গিক। কারণ তরুণদের হাতেই গড়ে উঠবে আগামীর উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

তরুণদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম জাগ্রত করার লক্ষ্যে এসব সমাবেশ হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এ সময় ক্ষমতাসীন দলগুলো দেশের বিভিন্ন মহলে তাদের দর্শন প্রতিষ্ঠা করতে দল বেঁধেছে। ক্ষমতাসীনরা মনে করেন, দেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র আওয়ামী লীগের অবদান। কিন্তু অন্যান্য যাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তাদের উপেক্ষা করা হয়েছিল। প্রায় ১৫ বছরে, প্রায় এক চতুর্থাংশ নতুন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এমনকি ক্ষমতাসীনদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করতে পারেননি। দাবি আদায়ে রাজপথে নামলে অনেকের ওপর হামলা ও মামলা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের পাশাপাশি তরুণ সমাজকে সরকারের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে।

তারুণ্যের এই কর্মসূচি সফল করতে ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র নেতাদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা প্রস্তুতিমূলক সভায় অংশগ্রহণ করে এবং গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেয়।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, এটি কোনো বিভাগীয় সমাবেশ নয়। প্রায় ৪ কোটি ভোটার ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেননি। তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান বলেন, যুব সমাবেশ থেকে বিভিন্ন মৌলিক অধিকার আদায়ে আমাদের চলমান আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, তারুণ্যের সমাবেশ রাজনৈতিক ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।

এ কর্মসূচি ছাড়াও শুক্রবার রয়েছে শ্রমিক দলের সমাবেশ। এ ছাড়া লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে জেলা পর্যায়ের বিদ্যুৎ অফিসে এক ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।