যাত্রীবেশে ডাকাতি লুটপাটের পর বাস যাত্রীকে দল বেধেঁ ধর্ষণ
ডাকাত দল প্রথমে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী রাতের বাসে উঠে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে যাত্রীদের মারধর ও ছিনতাইয়ের পর এক নারীকে গণধর্ষণ করা হয়।
অপকর্মের পর বুধবার সকালে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রক্তপাড়া জামে মসজিদের বিপরীত পাশে বালুর ডিবির বাসটি ফেলে দুর্বৃত্তরা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। টানা তিন ঘণ্টা বাসের যাত্রীদের ওপর এ বর্বরতা চালায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা। গত মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ার বড়াইগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে ঈগল পরিবহনের বাস (পাবনা-ব-১১-০১৫৪) ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান হাবিব ওই বাসের নিয়মিত যাত্রী। বাসের সুপারভাইজার রাব্বি ও হেলপার দুলাল তার পরিচিত। তবে এবার বাসের চালক নতুন। বড়াইগ্রাম থেকে বাসে ওঠেন। বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছে দিবারাত্রি হোটেলে রাতের খাবারের জন্য থামে এবং দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। ১০-১২ জন তরুণ যাত্রী উঠে। সবাই প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর একে একে বেঁধে ফেলে যাত্রীদের । তারা বাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের মোবাইল ফোন, টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে নেয়। পরে এক নারী যাত্রীকে একে একে চার যুবক ধর্ষণ করে। এরপর ডাকাত দল টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুরের রক্তপাড়া জামে মসজিদের কাছে বাসটি ফেলে পালিয়ে যায়। হাবিবুর রহমান বলেন, সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের উদ্ধার করে। খবর পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে।
অসুস্থ মেয়ে জেসমিনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের তারাগুনিয়া গ্রামের শিল্পী বেগম। বুধবার কানের অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। তিনি জানান, ডাকাতরা তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। এ সময় তারা তার স্বামী পিয়ার আলীকে ছুরি দিয়ে আহত করে। নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুর রশিদ অসুস্থ মাকে দেখতে নাটোর থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। বেতনের ২২ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা।
মধুপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক গাড়িতে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি স্বীকার করেন। বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের একটি দল তদন্ত কাজ চালাচ্ছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। কাউকে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব দিক বিবেচনা করে তদন্ত চলছে। এখনো কোনো তথ্য সামনে আসেনি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, এখনো কাউকে আটক করা যায়নি।