মোদি নিজেই নজরদারি সফ্টওয়্যার কেনার সাথে জড়িত
ভারতের মোদি সরকার পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পেগাসাস ইস্যুতে অস্বস্তিতে পড়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও দ্বারা তৈরি বিতর্কিত পেগাসাস স্পাইওয়্যার ভারতের বিক্রি করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২০১৭ সালে একটি সামরিক চুক্তির অধীনে পেগাসাস স্পাইওয়্যার লেনদেন করেছিলেন। মোদি তার দেশের জনগণকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য দুই বিলিয়ন ডলারে সফ্টওয়্যারটি কিনেছিলেন।
“ফাইটিং দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট পাওয়ারফুল সাইবার ওয়েপন” শিরোনামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বা আইফোন থেকে গোপন তথ্য ক্যাপচার করা যায়। যদিও এখন পর্যন্ত ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে ধুয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, মোদি সরকার দেশ ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
ইতিমধ্যেই জাতীয় রাজনীতিতে ভাবমূর্তি সংকটে ভুগছে বিজেপি। এদিকে পেগাসাস কেলেঙ্কারির খবর সামনে আসার পর বিজেপি সরকার চরম বেকায়দায় পড়েছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ভারতের মসনদে বসেছেন মোদি। তিনিই প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি জুলাই ২০১৭ সালে ইসরাইল সফর করেন। মোদির ইসরায়েল সফর উল্লেখযোগ্যভাবে ‘আন্তরিক’ ছিল। পরিদর্শনকালে, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে একটি স্থানীয় সমুদ্র সৈকতে খালি পায়ে হেঁটেছিলেন, যা খুব যত্ন সহকারে আয়োজন করা হয়েছিল। এই বন্ধুত্বের পেছনে যথেষ্ট কারণ ছিল। সেই সময়, দুই দেশ অত্যাধুনিক সরঞ্জাম এবং পরিচালনার বিনিময় এবং বিক্রয়ের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল। সব মিলিয়ে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারে চুক্তির মূল পণ্য ছিল পেগাসাস স্পাইওয়্যার। অন্য কথায়, পেগাসাস স্পাইওয়্যার কেনার বিষয়টি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারি সফরে নিষ্পত্তি হয়েছিল। এদিকে ঘটনার তদন্তে একটি প্যানেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
এদিকে পেগাসাস ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুলেছেন রাহুল গান্ধী। “মোদি সরকার দেশের নেতা এবং জনগণের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করার উদ্দেশ্যে পেগাসাস কিনেছেন। তাদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। শাসক দল বিরোধী এবং আদালতকে লক্ষ্য করেছে। দেশদ্রোহিতা, মোদি সরকার দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
তিনি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের ফোনে গোপন কথা বলার অভিযোগও করেন।
পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম একটি মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলেছেন: এটা লজ্জাজনক যে একটি সরকার দেশের জন্য কাজ না করে বিরোধীদের ফোনে আড়ি পাতছে।