জাতীয়

মেট্রোরেলের খুব কাছে নগরবাসী

বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ দিয়াবাড়ী-আগারগাঁও সেকশন উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সরকার প্রধান এখনো তারিখ ঘোষণা করেননি। মেট্রোরেল নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) তথ্য অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও সেকশনে নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে।

গত রোববার এমআরটি-৬ লাইনের আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১ ও পল্লবী স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চলছে চূড়ান্ত পলিশিংয়ের কাজ। শেওড়াপাড়া স্টেশনে এসকেলেটর এবং এক্সিলারেটর নির্মাণাধীন রয়েছে। অন্যান্য স্টেশনের নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল ভায়াডাক্ট (উড়ন্ত রেলপথ), রেলপথ ও বৈদ্যুতিক সংযোগ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেওড়াপাড়ায় শুধুমাত্র এমইপি পরীক্ষা ও কমিশনিং বাকি।

সড়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ বা ২৭ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন হতে পারে। তবে সোমবার ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী ড. প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এখনো সময় পাওয়া যায়নি। পেলেই জানানো হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ৮০-৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মেট্রোরেল প্রস্তুতি সভায় সূত্র জানায়, জনবল সংকট ও অপর্যাপ্ত প্রস্তুতির কারণে প্রাথমিকভাবে দিনে দুই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল করবে। সকালে এক ঘণ্টা এবং বিকেলে এক ঘণ্টা ট্রেন চলবে। এমএএন ছিদ্দিক বলেন, পর্যায়ক্রমে সব দেশে মেট্রোরেল চালু হচ্ছে। মেট্রোরেল দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ১০০% সক্ষমতায় চলবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি সাড়ে তিন মিনিটে ট্রেন চলবে। সড়ক পরিবহন দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রাথমিকভাবে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ট্রেন চলবে। তবে যাত্রীরা যাতে অভ্যস্ত হয় সেজন্য দীর্ঘ বিরতিতে ট্রেন চালানো হবে বলে জানান এমডি। ট্রেন স্টেশনে ৩০ সেকেন্ডের স্টপেজ থাকলেও এমএএন সিদ্দিক বলেন, প্রাথমিকভাবে এক থেকে দুই মিনিট স্টপেজ দেওয়া হবে, যাতে যাত্রীরা চলাচলে অভ্যস্ত হতে পারেন। যাত্রীরা এতে অভ্যস্ত হওয়ার সাথে সাথে বিরতির সময় হ্রাস পাবে।

প্রতিটি ট্রেনে ছয়টি করে বগি থাকে। প্রথম এবং শেষ বগিতে ট্রেন ম্যানেজমেন্ট মডিউল থাকবে। ফলে বাঁক ছাড়াই চলবে ট্রেন। ট্রেন নিয়ন্ত্রণে চালকদের কাজ কম। ট্রেন চলবে সফটওয়্যারে। প্রতিটি ট্রেন এক সময়ে সর্বোচ্চ ২,৩০৮ জন যাত্রী বহন করতে পারে, যা ৪৪টি বাসের সমতুল্য। এমএন সিদ্দিক বলেন, নিরাপত্তার কারণে ট্রেনটি প্রাথমিকভাবে ধারণক্ষমতার চেয়ে কম যাত্রী বহন করবে। ধীরে ধীরে যাত্রী বাড়ানো হবে।

ডিএমটিসিএলের পরিচালক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনে যতগুলো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে মেট্রোই সবচেয়ে কার্যকর। মেট্রোরেল অবশ্যই যানজট কমবে। দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত করিডোরে ব্যক্তিগত যানবাহন ও বাস চলাচলও কমবে।

মন্তব্য করুন