মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।সব ওয়ার্ডে রোগী, মেঝেতেও বিছানা
ঈদুল আজহার দিন কর্মচারী এহসানুল হক কাঁপতে কাঁপতে জ্বরে আক্রান্ত হন; সেই সঙ্গে বমি ও শরীর ব্যথা। সময় নষ্ট না করে পরের দিন পরীক্ষা করে জানা গেল তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। পরে তাকে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এহসানুলের বাবা নুরুল হক জানান, তাদের বাড়ি মানিকনগর এলাকায়। চারিদিকে আবর্জনা। তাই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, আমি আমার ছেলের জ্বর হওয়ার সাথে সাথে পরীক্ষা করি। মতিঝিল টিএন্ডটি কলেজের ছাত্রী শান্তা একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মান্দা এলাকায় থাকেন। ঈদের আগের দিন তার জ্বর হয়। পরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার রক্তে ২২০০০ প্লেটলেট রয়েছে। শান্ত বলেন, মান্দা এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি। অনেক ডোবা আছে। একটু বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটু পর্যন্ত পানি।
মুগদা হাসপাতালের অষ্টম তলায় পাঁচ বছরের টুনটুন, জোনায়েদ ও ছয় বছরের উম্মে হাবিবার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, এ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি। বেশিরভাগ আক্রান্ত শিশুদের জ্বর হয়। অনেকের শরীর ব্যথা ও বমি হয়। চিকিৎসকরা স্যালাইনের মাধ্যমে অনেক শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন।
শুক্রবার মুগদা হাসপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে, যাদের বেশিরভাগই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। বিভিন্ন ওয়ার্ডে, এমনকি সিঁড়ি ও লিফটেও রোগীদের স্বজনদের ভিড়ের মধ্যে পা রাখতে হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে অনেক ডেঙ্গু রোগীকে মশারি ছাড়া পড়ে থাকতে দেখা যায়। মশারি টাঙানো হয়নি কেন জানতে চাইলে সবাই গরমের অজুহাত দেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগীদের অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। কারণ, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তিকে যদি এডিস মশা কামড়ায় এবং সেই মশা কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তাহলে ডেঙ্গু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ নিয়াতুজ্জামান বলেন, প্রত্যেক রোগীকে মশারি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এটি একটি বিশেষায়িত ওয়ার্ড, তাই রোগীদের অবশ্যই মশারি পরিধান করতে হবে। পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সাধ্যমত সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।