• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    মিশরে আজ থেকে শুরু হচ্ছে জলবায়ু সম্মেলন।বাংলাদেশ অভিযোজনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ চাইবে

    বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি রক্ষায় আজ থেকে মিশরের বিলাসবহুল রিসোর্ট শহর শার্ম আল-শেখ-এ দুই সপ্তাহব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হচ্ছে।

    কপ-২৭ নামে পরিচিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে নীতিগত আলোচনায় রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান সহ হাজার হাজার বিশ্বনেতা অংশগ্রহণ করবেন। জলবায়ু পরিবর্তন কর্মীরা সম্মেলনে বড় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য উন্নত দেশগুলির প্রধান কার্বন নিঃসরণকারীদের চাপ দিচ্ছে। সম্মেলনে বাংলাদেশ, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, ধনী দেশগুলোকে অভিযোজনের জন্য অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দের জন্য চাপ দেবে। তবে সম্মেলনের সফলতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

    জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার অঙ্গীকার করেছে বিশ্ব সম্প্রদায়। তবে কার্বন নিঃসরণ কমাতে বিভিন্ন দেশের সরকারি পরিকল্পনা এখনও অপর্যাপ্ত। পরিবেশ নেতারা উন্নত দেশগুলোকে আরও কিছু করার আহ্বান জানাচ্ছেন। সম্মেলনে ২৪,০০০ কূটনীতিক এবং ১৩,০০০ পর্যবেক্ষক সহ প্রায় ৪০,০০০ অংশগ্রহণ করবেন। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে ১০০ টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত এই রিসোর্টটি পরিদর্শন করবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তবে বিশ্বের দুই বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী চীন ও ভারত নিম্ন স্তরের প্রতিনিধিদল পাঠাবে। চীন মোট বৈশ্বিক নির্গমনের প্রায় ২৭ শতাংশের জন্য দায়ী।

    বাংলাদেশের অবস্থান: বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ তার নিজস্ব এজেন্ডা নিয়ে হাজির হয়েছে। তবে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৭ -এ অংশগ্রহণ করেও এবার মিশর যাচ্ছেন না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের এজেন্ডা নিয়ে হাজির হবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী। শাহাব উদ্দিন তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এ কে আব্দুল মোমেনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

    স্টেকহোল্ডাররা বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য বর্ধিত অর্থায়নের গুরুত্বও তুলে ধরবে।

    ২০২৫ সাল পর্যন্ত উন্নত দেশগুলো প্যারিস চুক্তির আওতায় প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলে ঢাকা এই সম্মেলনে তা নিশ্চিত করার দাবি জানাবে। এছাড়া বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের পর এ বিষয়ে উন্নত দেশগুলোর অবস্থান কী হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে চায় ঢাকা।

    এ ছাড়া ঢাকা ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ (জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বড় ধরনের ক্ষতি) বিষয়ে কথা বলবে। ঢাকা ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি ও ক্ষতির জন্য আলাদা তহবিল চেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খরা, বন্যা ইত্যাদির কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব আন্তর্জাতিকভাবে দেখতে হবে। এছাড়া উন্নত দেশগুলোকে অভিযোজন ও প্রশমন, সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হবে।

    ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক সালিমুল হক বলেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অভিযোজন এবং প্রশমনের জন্য প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্যও প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।

    টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে এ বছর জলবায়ু সম্মেলনে প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে উন্নত দেশগুলোকে রাজি করাতে হবে।

    মন্তব্য করুন