• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    মিরসরাইয়ে উ. লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে এক কিশোর নিহত

    চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে জাহেদ হাসান রুমন (১৫) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের দাবি, রুমন তাদের কর্মী ছিল। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ওছমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

    এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে।

    নিহত রুমন আজমপুর গ্রামের মৃত নূর জামানের ছেলে। আহতরা হলেন- ওছমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হাসান (২৮), মিজানুর রহমান (৩২), ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সাঈদ খান দুখু (৩৫), আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮) ও মাহেদুল আলম রাকিব (২৫)। আহতদের মধ্যে মোহাম্মদ হাসানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

    এ ঘটনার পর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা গতকাল রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

    মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (মাস্তাননগর হাসপাতাল) চিকিৎসক খন্দকার নোমান সাইরী জানান, আজমপুরের ঘটনায় আহত মোট পাঁচজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে মোহাম্মদ হাসানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাথায় আঘাত পেয়ে রুমনের মৃত্যু হয়।

    রুমনের চাচা ইউনুস নূরী বলেন, হামলার সময় রুমন পালানোর চেষ্টা করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। সে পাশের পুকুরে পড়ে যায়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

    জানা যায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আজমপুর বাজারে অবস্থান করেন। এ সময় ছাত্রলীগ-যুব লীগের কয়েকজন কর্মী তাদের পথরোধ করেন।

    এরপর বিএনপি নেতার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।

    মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রলীগ-যুব লীগের নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলায় আমাদের ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন, আরও পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আজমপুর বাজারে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালায়।

    মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা বলেন, নিহত রুমন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, দিদারুল আলম মিয়াজী, সিরাজ, স্বপন ও কামালের নেতৃত্বে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।

    মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহিনুল ইসলাম স্বপন দাবি করেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আগামী ৫ অক্টোবর কর্মসূচির প্রস্তুতি সভা করেছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে পরে বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের ওপরও হামলা চালায় বলেও স্বীকার করেন স্বপন। তবে পুলিশ, হাসপাতাল বা অন্য কোনো সূত্র নিশ্চিত করতে পারেনি বিএনপির এই নেতার দাবি অনুযায়ী ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

    গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই সার্কেল) মনিরুল ইসলাম বলেন, আজমপুর বাজারে সংঘর্ষে জাহেদ হাসান রুমন নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ-ছয়জন। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।