মহেশখালী এসপিএম প্রকল্পে পরীক্ষামূলকভাবে তেল নিঃসরণ শুরু আজ
রোববার থেকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন (এসপিএম) প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সমুদ্রের নিচের পাইপলাইনের মাধ্যমে জাহাজ থেকে সরাসরি তীরের ট্যাঙ্কে অপরিশোধিত তেল নিয়ে যাবে।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শরীফ হাসনাত জানান, শনিবার ৮১ হাজার ৭৩৫ টন আরবীয় অপরিশোধিত তেল নিয়ে প্রথম জাহাজটি এসপিএম ডিসচার্জ পয়েন্টে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, তিন দিনের মধ্যে অপরিশোধিত তেল ছাড়া সম্ভব হবে।
জাহাজ থেকে আমদানিকৃত জ্বালানি তেল দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে নিষ্কাশনের জন্য বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে জি ২ জি ভিত্তিতে ডিপ সি এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ৩০ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রায় ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। যদিও প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা।
প্রকৌশলী শরীফ হাসনাত বলেন, “প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। এতে কিছু খরচও বাড়বে। বিশেষ করে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে, ডলারের দাম বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয়কে প্রভাবিত করেছে।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) অপরিশোধিত তেল (অশোধিত জ্বালানি তেল) পরিশোধন ক্ষমতা এখন বার্ষিক ১.৫ লাখ টন। নির্মাণাধীন ইউনিট-টু প্রকল্প চালু হলে ERL-এর অপরিশোধিত তেল পরিশোধন ক্ষমতা বার্ষিক ৪.৫ মিলিয়ন টনে পৌঁছাবে। অন্যদিকে দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বছরে প্রায় ৫০ লাখ টন ডিজেল আমদানি করতে হয়। বঙ্গোপসাগরে কর্ণফুলী চ্যানেলের নাব্যতা ৮ মিটার থেকে ১৪ মিটারের নিচে থাকায় অপরিশোধিত তেল বহনকারী মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) পরিচালনা করতে পারছে না চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ কারণে অপরিশোধিত তেলবাহী জাহাজগুলো গভীর সাগরে নোঙর করে। অশোধিত তারপর লাইটারেজে আনলোড করা হয়, যা সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় আমদানি করা জ্বালানি পরিষ্কারে সময় ও খরচ বাঁচাতে এসপিএম দিয়ে পাইপলাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্র জানায়, এসপিএম নির্মাণের পাশাপাশি ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতার তিনটি অপরিশোধিত তেল সংরক্ষণের ট্যাঙ্ক, ৩০ হাজার টন ধারণক্ষমতার তিনটি ডিজেল স্টোরেজ ট্যাংক এবং মহেশখালীতে একটি পাম্প স্টেশন, স্কাডা সিস্টেম এবং একটি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মহেশখালীর মাতারবাড়ী উপকূলে নির্মিত। প্রকল্পের মূল কাজের অংশ হিসাবে ১৪৬ কিলোমিটার অফশোর এবং ৭৪ কিলোমিটার অনশোর সহ মোট ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে।