ভ্যানচুরির অভিযোগে গণপিটুনি, প্রাণ হারালেন জামাই-শ্বশুর
রংপুরের তারাগঞ্জে চুরির সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুরের রূপলাল দাস (৪০) এবং মিঠাপুকুরের বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। তারা ভাগিনা জামাই-শ্বশুর। নিহতের পরিবার, পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে যে রূপলাল দাসের মেয়ে নূপুর দাসের সাথে মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের কথা হচ্ছিল। আজ, রবিবার বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য প্রদীপ দাস মিঠাপুকুর থেকে ভ্যান চালিয়ে রূপলাল দাসের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পথ না জেনে প্রদীপ দাস সাওয়ার ইউনিয়নের কাজিরহাট এলাকায় রূপলালকে ফোন করেন। রূপলাল সেখানে যান এবং তারা দুজন রিকশা করে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা দেন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজিরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চুরির সন্দেহে কয়েকজন তাদের আটক করে। এরপর লোকজন সেখানে জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানের বস্তা থেকে লোকজন চারটি ছোট প্লাস্টিকের বোতল বের করে। বোতলের একটি খুললে ভেতরে থাকা তরলের গন্ধে ভ্যান চালক পশারীপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেন এবং বুড়িরহাটের মেহেদী হাসান অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে মানুষের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ভ্যান চুরির সন্দেহে তারা তাদের অজ্ঞান করে মারধর শুরু করে। বটতলা থেকে তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এনে মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে তারা অজ্ঞান হয়ে গেলে সেখানেই ফেলে রাখা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় তারাগঞ্জ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক রূপলাল দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং রবিবার (১০ আগস্ট) সকালে তিনিও মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন নিহত রূপলাল দাসের ভাই খোকন দাস। তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক জানান, গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

