ভূমিকম্পের সময় জন্ম নেওয়া শিশুটির বাবা-মা বা ভাই-বোন কেউ রইল না
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক নবজাতক শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এক আত্মীয় জানান, ভূমিকম্পের পরপরই তার মা প্রসব বেদনায় পড়ে যান। মৃত্যুর আগে তিনি একটি সন্তানের জন্ম দেন। ভূমিকম্পে নবজাতকের বাবা, চার ভাইবোন ও এক খালাও নিহত হয়েছেন।
আফরিনের কাছের একটি স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, শিশুটির শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
তুরস্কের সীমান্তের কাছে ইদলিব প্রদেশের জিন্দারিসে শিশুটির পরিবার যেখানে বাস করত, সেটি ছিল ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়া ৫০টি ভবনের মধ্যে একটি।
শিশুটির চাচা খলিল আল-সুয়াদি জানান, ধসের খবর শুনে আত্মীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
তিনি বলেন, “আমরা খনন করার সময় একটি শব্দ শুনেছিলাম।” তারপরে আমি ধুলো পরিষ্কার করেছি এবং শিশুটিকে নাভির সাথে সংযুক্ত দেখতে পেয়েছি। পরে আমরা ডাল কেটে ফেলি। আমার কাজিন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শিশু বিশেষজ্ঞ হানি মারুফ জানান, শিশুটির শরীরে একাধিক আঘাত ও ক্ষত রয়েছে। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে তার হাইপোথার্মিয়া হয়েছে। আমাদের তাকে গরম করে ক্যালসিয়াম দিতে হয়েছিল।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমান, এই শক্তিশালী ভূমিকম্পে আড়াই লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
দুই দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উত্তর সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকজন সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করছে। কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো কেউ নেই।
গত সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সিরিয়া সীমান্তে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে। পরে আরও কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।