ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল।জুনে বিল ৮৪ টাকা সালের জুলাইয়ে ১৭৩৮ টাকা
দেলোয়ার হোসেন চাঁদপুরের রামপুরে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর এই গ্রাহকের জুন মাসের বিদ্যুৎ বিল ৮৪ টাকা। কিন্তু জুলাই মাসে তার বিল এসেছে ১ হাজার ৭৩৮ টাকা। শুধু পল্লীবিদ্যুৎ নয়, ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকার বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছেও অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, গ্রামে গ্রামেও ঠিকমতো বিদ্যুৎ নেই। তাকে অতিরিক্ত বিলের বোঝা চাপানো অন্যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিস্টেম লস কমাতে গিয়ে গ্রাহকের বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত বিদ্যুতের ব্যবহারের বোঝা যোগ হয়। এটি মে, জুন এবং জুলাই মাসে বেশি হয়।
রাজধানীর মহানগর প্রকল্পের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, মে মাসে ফুল এসি চললেও বিল এসেছে সাড়ে তিন হাজার টাকা। জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে চার হাজার টাকা। খুব কম এসি চালালেও জুলাই মাসে বিল এসেছে ৬ হাজার ৮০০ টাকা। তিনি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) গ্রাহক। ভূত বিলের অধিকাংশ অভিযোগ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামের গ্রাহকদের বিল বেশি হলেও এ নিয়ে তাদের তেমন কোনো অভিযোগ নেই।
ভুতুড়ে বিল সম্পর্কে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, সিস্টেম লস কমাতে সরকার বিতরণ কোম্পানিগুলোকে নিয়মিত টার্গেট দিয়ে থাকে। কিন্তু বিতরণ ব্যবস্থাপনা সেভাবে উন্নত হয়নি। ফলে সিস্টেম লস কমে না। কিন্তু বছর শেষে সিস্টেম লস কমিয়ে বেশি বিল করে সফলতা দেখায়।
অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামান মঙ্গলবার রাতে বলেন, অফিস এখন বন্ধ। গ্রাহক যদি আগামীকাল অভিযোগ নিয়ে আসেন, তারা নথিপত্র পরীক্ষা করে বলতে পারবেন কী হয়েছে।
একটি বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যুতের ব্যবহার যেমন বেড়েছে, তেমনি চুরিও বেড়েছে। বিভিন্ন কারণে সিস্টেম লস। অনেক লাইনম্যান গ্রাহকদের হয়রানি ও অতিরিক্ত চার্জ দিতে বিল বাড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তা সমাধান করা হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৮ হাজার ১৩৪ মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুতের উৎপাদন ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ৫৪ লাখ। মোট সঞ্চালন লাইন ১৪ হাজার ৯৩৪ সার্কিট কিমি। বিতরণ লাইন ৬ লাখ ৭৩ হাজার কিমি। ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিতরণ ক্ষতি ৭.৭৪ শতাংশ।