শিক্ষা

ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে অনিয়ম।অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তির পরেও জিরো আসন!

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংক্রান্ত কোনও বিধি মেনে চলার অভিযোগ করা হয়নি। এই বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেপুটেশনে থাকা শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তা (অধ্যক্ষ) এর বিরুদ্ধে অভিভাবকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি আবেদনও পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদফতর। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার অফিসও অভিযোগগুলি তদন্ত করছে।

২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে অতিরিক্ত ৪৪৩ জন ছাত্রী ভর্তির অভিযোগে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। এই শিক্ষার্থীরা এখনও সেই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি শূন্য আসন দেখিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাত শতাধিক নতুন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার উদ্যোগ নিয়েছিল। অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশ্ন, সংস্থাটি এত খালি আসন কোথায় পেল?

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ফওজিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।তবে সংস্থার একটি শাখার প্রধান শাহ আলম বলেছেন, আমরা ঢাকা  বোর্ডের কাছ থেকে এই শাখার অনুমোদন পেয়েছি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বলেছে যে এই শিক্ষকের দাবি অসত্য। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল মনসুর ভূঁইয়া বলেছেন, “এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য শাখা বা আসন সংখ্যা বাড়ানোর কোনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি।” তারা সবেমাত্র আবেদন করেছে, যা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদিত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এবং জেলা প্রশাসন পৃথক তদন্ত শেষে সুপারিশ করে। যদি পাওয়া যায় তবে অনুমোদন দেয়।

২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য বিভিন্ন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য গত ১৩ই  জানুয়ারী একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ১৮ জানুয়ারী সকাল ১০ টা থেকে ১১ জানুয়ারী রাত ১১ টা পর্যন্ত মূল ক্যাম্পাসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মোট ৮৫৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন। আবেদন ফি ছিল ২০৫ টাকা। ২৪ শে জানুয়ারি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

অভিভাবকদের দাবি, এই ভর্তি নিয়ে উচ্চ আদালতে দুটি রিট মামলা রয়েছে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়নি। তবে দ্বিতীয়টির আলোকে প্রতিষ্ঠানটি এই ভর্তি প্রক্রিয়াটি চালাচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চিঠির নির্দেশনা যথাযথ ছিল না বলেও দাবি করেছেন তারা। বোর্ডের এই চিঠিটি দেখানোর পরে অধ্যক্ষ ২৪ শে অক্টোবর ভর্তির জন্য নোটিশ দিয়েছেন। সেই আলোকে সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।

নজরুল ইসলাম কাজলসহ কয়েকজন অভিভাবক পিতা-মাতার পক্ষে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি এই সংবাদদাতাকে বলেছেন যে ২১ শে জানুয়ারী দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের আবেদনে ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল করে এবং অর্থ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে ৯ ই মার্চ আরও একটি রিট দায়ের করা হয়। আদালত ঢাকা বোর্ডকে রিট মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেয়। আদালত ভর্তির বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি। প্রথম রিটটি গোপন রেখে দ্বিতীয়ের আলোকে শিক্ষার্থীদের ভর্তির নির্দেশনা দেওয়া আদালতের নির্দেশনার পরিপন্থী এবং অনৈতিক।

মন্তব্য করুন