ভরা মৌসুমেও আমের দাম বেশি থাকায় খুশি চাষিরা
গত বছর আম বিক্রি করে শ্রমিকদের টাকা উঠছিল না। অনেক আম পচে গেছে। এবার উল্টোটা। আম বাজারে নিয়ে যেতেই ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। স্ফীত দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যস্ত মৌসুমেও দাম কমেনি, তবে প্রতি আউন্সে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। কথাগুলো বলেছেন পুঠিয়ার আম চাষি ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম।
আমের বাজারদর দেখলে তার কথার সত্যতা পাওয়া যাবে। বুধবার রাজশাহীর সবচেয়ে বড় বানেশ্বর হাটে জনপ্রিয় ক্ষীরশাপতি বা হিমসাগর আম বিক্রি হয়েছে আউন্স প্রতি ৩,৪০০ থেকে ৪,২০০ টাকায়। গত বছর একই সময়ে এই আম বিক্রি হয়েছিল দেড় থেকে দুই হাজার টাকা দরে। গত বছর একই সময়ে ল্যাংড়া আমের দাম ছিল ১ হাজার ২শ’ থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। গত বছরের ৩০০ টাকার লক্ষণভোগ এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। এ ছাড়া ৮০০ টাকার আম্রপালি বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ২৪০০ টাকায় এবং ৪০০ টাকার ফজলি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
সিরাজুল বলেন, আগের মৌসুমে আমের দাম এত বেশি কখনো হয়নি। এবার ফলন কম হলেও দাম ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা। চাহিদা থাকায় আম বিক্রিতে কোনো সমস্যা নেই।
রাজশাহীর বাঘার আম ব্যবসায়ী ও কৃষক শফিকুল ইসলাম ছানা জানান, এবার আমের ফলন খুবই কম। ৭০ শতাংশ গাছে এবার আম নেই। এ কারণে দাম অনেক বেশি। বাজারে আম বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ১৬ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে ভালো দাম পাননি কৃষকরা। এ ছাড়া করোনা ও রমজানের কারণে মানুষ কম খেয়েছে আম।
রাজশাহী ফ্রুট ল্যাবরেটরির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল আলীম বলেন, এবার রমজানের পর আম পাকেছে। করোনা না থাকায় মানুষ বাইরে গেছে। এসব কারণে মানুষ বেশি আম খাচ্ছে। এতে করে দাম বাড়তে কমছে না। তিনি বলেন, আম ফলের রাজা হলেও দাম সবসময়ই কম। অধিকাংশ ফলের চেয়ে স্বাদ ও অর্থ বেশি হলেও বাজারে অধিকাংশ ফলের চেয়ে কম দামে আম বিক্রি হয়। দাম বেশি হলে চাষিরাও উৎপাদন বাড়াবে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজাদ্দার হোসেন জানান, পণ্যের দাম বাড়ায় এবার আমের দাম বেড়েছে। গত বছর আম উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ১৮ হাজার টন। এ বছর ২ লাখ ১৪ হাজার ৬০ টন আম উৎপাদন হতে পারে।