• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত।পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থ হলে বিচারের আওতায় আনতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

    প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে সবার জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার প্রত্যয় নিয়ে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৫ জুন সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। কেন্দ্রীয়ভাবে গতকাল বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

    পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ড. শাহাব উদ্দিন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী ও সচিব ড.ফারহিনা আহমেদ।

    তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, প্রকৃতি সংরক্ষণ, বন সৃষ্টি অন্য কারো জন্য নয়, নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য করতে হবে। অন্যথায় আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াব। বিশ্বে বছরে ৪০০ মিলিয়ন টন এবং বাংলাদেশে প্রায় ৩০০০ টন প্লাস্টিক উৎপন্ন হয়। বিশ্বব্যাপী, ১১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে নিক্ষেপ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিক দূষণের এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৫০ বছরে সমুদ্রের অনেক এলাকা মাছশূন্য হয়ে পড়বে।

    সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আমিনুজ্জামান মোঃ সালেহ রেজা এবং বগুড়া বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সভাপতি ডাঃ এস এম ইকবালকে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবনানন্দ রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম মফিজুল ইসলাম, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটিকে জাতীয় পরিবেশ পদক প্রদান করা হয়।

    এছাড়াও, ছয়টি বিভাগে নির্বাচিত ১৮ জন বৃক্ষরোপণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২১ এবং সামাজিক বনায়নে অংশগ্রহণকারী সর্বোচ্চ লভ্যাংশ সহ পাঁচজন মহিলা এবং পাঁচজন পুরুষকে ভূষিত করা হয়েছে। বৈঠক শেষে কনভেনশন সেন্টার সংলগ্ন শেরেবাংলা নগরে পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। পরিবেশ মেলা ১১ জুন পর্যন্ত এবং বৃক্ষমেলা প্রথম ২৬ জুন পর্যন্ত এবং ঈদের পরে ১ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত খোলা থাকবে।

    ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে সবুজ আন্দোলনের ১০ দফা দাবি

    সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে পরিবেশ দূষণ রোধ ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে ১০ দফা দাবি জানায় ‘সবুজ আন্দোলন’। সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বাপ্পী সরদার বলেন, বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে ঢাকার বর্তমান দুই মেয়র ক্ষমতায় আছেন। কিন্তু বাসযোগ্য শহরগুলো এখনো অধরা।

    দূষণ কমানোর আহ্বান

    একই দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে আওয়াজ ফাউন্ডেশন পরিবেশ রক্ষা ও দূষণ রোধে সবুজায়নের গুরুত্বের আহ্বান জানায়। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার বলেন, গাছ কাটা, শিল্পের ধোঁয়া ও দূষিত বর্জ্য বাতাসে মিশে পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

    প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বিকল্প পণ্যের সহজলভ্যতার আহ্বান জানান

    অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে বিকল্প পণ্যের সহজলভ্যতার আহ্বান জানায়। সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাসান হাফিজ, ইডিএবি চেয়ারপারসন আবদুল মতিন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী ও ইডিএবি কর্মসূচির পরিচালক কাওসার আলম কনক।

    পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান

    পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউট গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ‘আগে উন্নয়ন, পরে পরিবেশ’-এর ভ্রান্ত উন্নয়ন দর্শন থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রণয়ন করতে হবে এবং পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে পরিবেশ দিবসের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জিত হবে না।

    উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধের দাবি

    ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোড বৃক্ষ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব এক বিবৃতিতে জানান, নগরীর রোড ডিভাইডার উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের স্বার্থে সাতমসজিদ রোডে ৬০০টি দেশীয় গাছ কাটা হয়েছে। নাগরিক আন্দোলনের কারণে ৩৭টি গাছ এখনও রাস্তার ডিভাইডারে দাঁড়িয়ে আছে। উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং জায়গায় জায়গায় দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে।