খেলা

বিশ্বকাপ নিয়ে অনলাইন জুয়া: ছাত্র, যুবক, নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি আসক্ত

চলতি অক্টোবরে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কারণে সারা দেশে অনলাইন জুয়া উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ছাত্র এবং তরুণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে আসক্তি বেশি দেখা যায়। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জুয়া বন্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।

অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্রে জানা গেছে, অনলাইন জুয়াড়িদের মাধ্যমে এক বছর ৯ মাসে দেশ থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই অর্থগুলি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এই বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাচার করা হয়েছিল।

অনলাইন জুয়া বিদেশ থেকে পরিচালিত হলেও দেশে তাদের এজেন্ট রয়েছে। এই জুয়ার সাইটের অ্যাডমিনরা রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারতে।

   জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ স্থানীয় এজেন্টরা তা একটি বিশেষ মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাপের মাধ্যমে মার্কিন ডলারে রূপান্তর করে পাচার করে।

এ প্রসঙ্গে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, তারা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দেশ থেকে অর্থ পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে ই-কমার্সের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া সত্ত্বেও অনলাইন জুয়া সম্পর্কে সচেতন নয়।

ঢাকার বনশাল, ইসলামপুর, লালবাগ, চকবাজার, লক্ষ্মীবাজার, শাঁখারিবাজার, তাঁতীবাজার, পানিটোলা, কোতোয়ালি রোড, গেন্ডারিয়া, নারিন্দাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অনেক নিম্ন আয়ের পেশাজীবী আইসিসি বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত।

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই জুয়া।

সদরঘাটে ফুটপাতের এক চা বিক্রেতা অনলাইনে জুয়া খেলেন। গত সপ্তাহে একটি খেলায় বাজি ধরার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সময় তিনি বলেন, “সেদিন আমি বিরাট কোহলির এক ওভারে অন্তত একটি ছক্কা মারবে ১০০০ টাকা বাজি ধরেছিলাম। কিন্তু সে কোনো বলেই ছক্কা মারতে পারেনি, তাই আমি হেরে গেলাম।

‘গোয়েন্দা সূত্র বলছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার মানুষ বেটউইনার সাইটে জুয়া খেলে। এদের অধিকাংশই সাধারণ আয়ের মানুষ। খেলা ও অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের স্বল্প শিক্ষিত মানুষও ‘ভাগ্য পরিবর্তনের’ আশায় এতে জড়িয়ে পড়ছে। সিআইডির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সাধারণত একজন জুয়াড়ি দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বাজি ধরে।

আইন প্রয়োগকারী সূত্র বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে এক হাজারেরও বেশি অনলাইন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শতাধিক বিদেশি এজেন্ট রয়েছে।