• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    বিশেষজ্ঞরা খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন

    জামিনের শর্ত শিথিল করা হলে আইনী বাধা নেই: আইনমন্ত্রী

    পর্দার আড়ালে তাঁর পরিবার ও দলের নেতারা অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য সরকারের সাথে আলোচনা করছেন। অনুমতি পাওয়ার জন্য সরকার সবুজ সংকেত দেওয়ার সাথে সাথে পরিবার তাকে বিদেশে প্রেরণের জন্য নতুন করে অনুরোধ করবে। এর জন্যও প্রস্তুতি চলছে।

    শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিএনপি নেত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর পরামর্শও দিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এই পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বিএনপির হাই কমান্ডকেও এই পরামর্শ দিয়েছেন। দশ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলেছেন খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের চেয়ে ভাল। তবে অক্সিজেন  এখনও দিতে হচ্ছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

    এই পরিস্থিতিতে বিএনপির নেতাকর্মীরাও আশা করছেন যে সরকার খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে বিদেশে চিকিৎসা করার অনুমতি দেবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবে।

    খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পর থেকে তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন নিয়মিত চিকিৎসা করতেন মূলত সিঙ্গাপুর ও লন্ডনে। তারা তাকে এই দুই দেশের যে কোনও একটিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এভারকেয়ার হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন বিষয়টি নিয়ে এবং খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে। সেখানে তিনি এক ঘন্টা চতুর্থাংশ অবস্থান এবং চিকিত্সকদের সাথে কথা বলেছেন।

    এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মহাসচিব বলেন যে তার অবস্থা আগের দিনের (সোমবার) চেয়ে অনেক ভাল এবং স্থিতিশীল। তাকে দুই লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বাইরে নিয়ে যাওয়া দরকার।

    গতকাল রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন যে করোনভাইরাস সংক্রামিত খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া হলে আদালতের অনুমতি চাইতে হবে। তাকে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর সর্বাধিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে সেখানে।

    তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন যে খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেয়েছে এই শর্তে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হয়নি; তবে, সরকার যদি এই শর্তটি শিথিল করে দেয়, তবে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার কোনও আইনি বাধা নেই। এটি সম্পূর্ণরূপে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। তবে তারা এ পর্যন্ত বিএনপি বা খালেদা জিয়ার পরিবারের কাছ থেকে কোন আবেদন পাননি।

    তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা মতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে। আমার মনে হয় যদি সে বিদেশ যেতে চায় তবে তাকে অনুমতি নিতে আদালতে আসতে হবে। দেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার করা সম্ভব কিনা তা সরকার বিবেচনা করবে।

    এদিকে, বিএনপি নেতারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে ইতিমধ্যে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া জরুরি। এটি কেবলমাত্র সরকার প্রদত্ত কার্যনির্বাহী আদেশ সংশোধন করে এবং বিদেশে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেই সম্ভব। এটি সমগ্র সরকারের একমাত্র পূর্বানুমতি। এখানে বিএনপি বা তার পরিবার বা আইনজীবীদের কিছুই করার নেই।

    বিএনপির কূটনৈতিক শাখার সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি সদয় আচরণ করে সরকার এগিয়ে আসবে।” তিনি কেবল এই দেশে নয় গোটা বিশ্বজুড়ে সমস্ত গণতান্ত্রিক মানুষের নেত্রী। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সরকার মানবিক কারণে এমনকি খালেদা জিয়াকে উন্নততর চিকিত্সা সরবরাহ করবে।

    এদিকে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তার চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।

    মন্তব্য করুন