জাতীয়

বিমানের ই-মেইল সার্ভার: হ্যাকারদের দাবি ৫০ লাখ ডলার

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাকারদের দখলে রয়েছে। তারা বিমানের কাছে ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছে। এই দাবি পূরণ না হলে বিমানের প্রায় একশ গিগাবাইট  তথ্য সবার জন্য উস্মুক্ত কর দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা। বিমানের কয়েকটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

শুক্রবার হ্যাকারদের মুক্তিপণ দাবির বিষয়টি সারাদেশে ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম সাংবাদিকদের কাছে বরাবরই দাবি করে আসছেন, ই-মেইল সার্ভার নিয়ে হ্যাকাররা বিমানের কাছে কোনো মুক্তিপণ দাবি করেনি। এমনকি গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকারের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিমানের ই-মেইল সার্ভার নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করেছে। হ্যাকাররা সার্ভারের ব্যাপারে কোনো ধরনের মুক্তিপণ দাবি করেনি।

সূত্র জানায়, প্রায় এক সপ্তাহ আগে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হয়। এখন পর্যন্ত তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। হ্যাকাররা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস না করার বিনিময়ে বিমানের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। এই টাকা পরিশোধের জন্য বিমানের হাতে আছে মাত্র তিন দিন।

বিমানের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১৭ মার্চ বিমানের ই-মেইল সার্ভার র‍্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত হয়। সার্ভার হ্যাক হওয়ার পর বেশ কয়েকবার সতর্ক করে বিমানের কাছে ৫০ লাখ ডলার দাবি করে হ্যাকাররা। এক ধরনের ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার প্রোগ্রাম বা ম্যালওয়্যার যা কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ডিভাইসে সংরক্ষিত তথ্য অ্যাক্সেস করতে বাধা দেয়। এই ম্যালওয়্যার দ্বারা সংক্রামিত হলে, ডিভাইসটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে বা এতে থাকা ডেটা ম্যালওয়্যারের পিছনে থাকা হ্যাকাররা চুরি করতে পারে। বিমানের ডাটাবেসে যাত্রী, ক্রু এবং অন্যান্য বিমান সংস্থার তথ্যের পাসপোর্টের বিবরণ রয়েছে। এছাড়াও হ্যাকারদের কাছে সমস্ত ফ্লাইটের ফ্লাইট, লাগেজ এবং ক্রু সম্পর্কে তথ্য রয়েছে। আইটি বিশেষজ্ঞরা তাদের ব্যবহার করা র‍্যানসমওয়্যার শনাক্ত করার জন্য যে বৈশিষ্ট্যগুলি সন্ধান করেন তা ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, এটিকে আলাদা করা বা দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা অসম্ভব করে তুলেছে।

তারা জানিয়েছে, বিমানের ই-মেইল সার্ভারে যে ম্যালওয়্যার ব্যবহার করা হয় তাকে জিরো-ডে অ্যাটাক বলা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থাগুলির আইটি অফিসার এবং তদন্তকারী অফিসাররা এই ধরনের ম্যালওয়্যার আগে কখনও দেখেননি৷ এর আগে ২০২২ সালে, বিমান আরেকটি ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছিল।

শুক্রবার বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম সাংবাদিকদের বলেন, তাদের সার্ভার হ্যাক হয়নি, এটি ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত। সার্ভার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে. এর ফলে ই-মেইল সার্ভিসে কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে তা সমাধান করা হয়েছে। সার্ভার হ্যাকিং ও অর্থ দাবি নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

মন্তব্য করুন