বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার সিন্ডিকেটের ছক।প্রাইভেট এক কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে
প্রবাসী শ্রমিকদের করোনা পরীক্ষার জন্য অল্প সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের ক্ষমতা সরকারের আছে। দক্ষতা ভালো। খরচ কম হবে। যাইহোক, একটি বেসরকারি কোম্পানি যে বেশি দামে পরীক্ষা করতে চায় সে কাজ দিতে শুরু হয়েছে তোরজোড়। স্বাস্থ্য বিভাগের একজন সাবেক মহাপরিচালক বেসরকারি প্রতিষ্টানটির সঙ্গে জড়িত।
প্রতিষ্টানটির নাম ’ডিএমএফআর মলিকুউলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক’। তারা প্রতি পরীক্ষায় ২,৭০০ টাকা নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও শুরুতে তারা ১,৭০০ টাকা অফার করেছিল। এটি ছাড়াও, কমপক্ষে সাতটি বেসরকারি সংস্থা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ২,০০০ থেকে ২,২০০ টাকা টেস্ট করার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের আবেদন পর্যালোচনা না করে ‘ডিএনএফআর’কে কাজ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। যাইহোক, উচ্চ মূল্য ছাড়াও, কোম্পানির বিরুদ্ধে আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিমানবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক, অধ্যাপক দীন মোহাম্মদের আদ্যক্ষর ‘ডিএন’ এবং ব্যবসায়ী ফয়জুর রহমানের আদ্যক্ষর ‘এফআর’। দীন মোহাম্মদ ছিলেন প্রতিষ্টানটির চেয়ারম্যান।
প্রাসঙ্গিক সূত্র জানাযায়, বেসরকারি খাতকে তাদের মুনাফার সুযোগ দেওয়ার জন্য কাজটি দেওয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের জন্য জায়গা সংকটের অজুহাতে শুধুমাত্র একটি কোম্পানিকে কাজ দিলে ‘সিন্ডিকেট’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে প্রবাসী শ্রমিকদের পকেট থেকে নির্ধারিত ফি -র চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হতে পারে।
ফ্লাইটের অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা করার নেগেটিভ সার্টিফিকেটের বাধ্যবাধকতার কারণে ১৩মে থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিরা কাজে ফিরতে পারছে না। ছুটিতে দেশে আটকা পড়া শ্রমিকরা কাজে ফিরতে রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। তাদের সমস্যা সমাধানে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বিমানবন্দরে একটি আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। কাজে ফিরতে মরিয়া হয়ে শ্রমিকরা কলম্বো, নেপাল এবং তুরস্ক হয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ খরচে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছেন।
১ সেপ্টেম্বর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদের সভাপতিত্বে একটি আন্ত -মন্ত্রণালয় সভায় ল্যাব স্থাপনের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি (ইওআই) জারি করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাই করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালককে সভাপতি করে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ল্যাব স্থাপনের কারণ হচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অক্ষমতা দেখিয়েছে বলে বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যাইহোক, কারিগরি কমিটির মাধ্যমে যাচাই -বাছাইয়ের পর নিয়োগ দেওয়া হবে।
একটি কোম্পানিকে নিয়োগ দিলে সিন্ডিকেট হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আরও আট থেকে দশটি কোম্পানি আবেদন করেছে।