বিমানবন্দরে করোনা টেস্ট ল্যাব স্থাপন নিয়ে যা হচ্ছে
যদিও আগামীকাল পরশু হবে এই আশ্বাস দিয়ে দুই সপ্তাহ কেটে গেছে, বিমানবন্দরে বিদেশীদের করোনা পরীক্ষা শুরু হয়নি। সবশেষে, বলা হয়েছিল যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের যাত্রীদের জন্য দ্রুত পরীক্ষা শুরু হবে ২৮, সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে। তবে সোমবার রাতে জানা গেছে যে মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষা শুরু হবে না। কারণ, আমিরাতের অনুমতি মেলেনি।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএ) জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুমতি পাওয়ার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে।
বেবিচাকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাব বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলও ভালো।
চেয়ারম্যান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও পরীক্ষা শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুমতি নিয়ে দুই দেশ কঠোর কাজ করছে। ঢাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টা আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত করোনার দ্রুত পরীক্ষার জন্য একটি শর্ত দিয়েছে। এ কারণে গত মে মাস থেকে দেশে কর্মরত প্রবাসীরা যেতে পারছেন না। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ আরও বলেন, দুই বা তিন দিনের মধ্যে ল্যাবটি স্থাপন করা হবে।
কিন্তু ল্যাব নির্বাচনে সমন্বয়ের অভাব এবং সিদ্ধান্তের পুনরাবৃত্তি, টেনে নিয়ে যাওয়া এবং একটি সংস্থা নিয়োগের চেষ্টা করতে ২০ দিন লেগেছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদফতরের কারিগরি কমিটি ল্যাব স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার জন্য সাতটি কোম্পানি নির্বাচন করে। কিন্তু পরের দিন তিনটি প্রতিষ্ঠান এই তালিকা থেকে বাদ দেয়ার পর। নির্বাচনের সময় পর্যাপ্ত তথ্য প্রদান করেনি এমন তিনটি প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত। সাতটি কোম্পানির মধ্যে ছয়টি বিমানবন্দরের ভেতরে ল্যাব স্থাপন করেছে। পার্কিং ভবনের ছাদে স্থায়ী ল্যাব স্থাপন করতে আরো সময় লাগবে।
গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ল্যাব পরিদর্শন করেন এবং শনিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানান। পরদিন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী পরিদর্শন করেন এবং একই কথা বলেন। কিন্তু ল্যাবের সক্ষমতা যাচাই না হওয়ায় শনিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হয়নি। বলা হয়েছিল রবিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। সেদিন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী জানান, এটি মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসওপি পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই। দেশ এসওপি চায়নি। শুধু এটা পাঠানো সময় নষ্ট করছে। যাতে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান ‘লাভজনক’ হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি গত মাসে মন্ত্রণালয়ে চাকরির জন্য আবেদন করার সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসের শংসাপত্র জমা দেয়। কোম্পানি ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। সূত্রের মতে, করোনা পরীক্ষার কাজ ওই প্রতিষ্ঠানেই দেওয়ার জন্য ‘চাপ’ ছিল। বর্তমানে তারাই একমাত্র করোনার পরীক্ষা -নিরীক্ষা করছে। গত কয়েক দিনে শত শত শ্রমিক তাদের ল্যাব থেকে পরীক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন। যে যাত্রীরা মঙ্গলবার তাদের পরীক্ষা করেছে তারাও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে। অন্য পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ল্যাব স্থাপন করলেও তারা পরীক্ষা পরিচালনা করতে পারেনি।
বেবিচাক চেয়ারম্যান বলেন, মহামারী চলাকালীন বাংলাদেশে গৃহীত ব্যবস্থা অন্যান্য দেশ প্রশংসা করেছে। প্রবাসীদের ফেরত পাঠানোর চাপ ছিল, আমরা তা মোকাবেলা করেছি। বিমানবন্দরে আমরা যে ব্যবস্থা নিয়েছি তাতে কোনো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক নির্বাচিত একটি ল্যাব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের লাইসেন্স রয়েছে। সোমবার রাতে তারা যে ৭০ জন যাত্রী পরীক্ষা করেছেন তারা দুবাই যান। মঙ্গলবার, দুবাইয়ের অন্য ফ্লাইটের প্রবাসী যাত্রীরা এই ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করে গন্তব্যে যাবেন।