বিদেশী সহায়তায় জান্তার মারণাস্ত্র
মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দেশীয়ভাবে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে স্নাইপার রাইফেল, বিমান বিধ্বংসী বন্দুক, মিসাইল লঞ্চার, গ্রেনেড, বোমা এবং ল্যান্ডমাইন। সেনাবাহিনীর বিরোধীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর জন্য তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। আর ১৩টি দেশ এসব অস্ত্র ও সরঞ্জামের কাঁচামাল সরবরাহ করছে।
মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
যেসব দেশ ও অঞ্চল মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে কাঁচামাল বা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে সেগুলো হলো ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভারত, জাপান, অস্ট্রিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ইউক্রেন, তাইওয়ান এবং আরও দুটি দেশ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভারত ও জাপানের কোম্পানিগুলো পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মিয়ানমারকে অস্ত্র উৎপাদনে সহায়তা করছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, দেশে একটি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছিল। পাল্টা অভ্যুত্থানকারীরা সামরিক শাসনকে প্রতিহত করার জন্য বিদ্রোহীরা দলে যোগ দেয়। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ মিয়ানমার জান্তার কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। অস্ত্র উৎপাদনের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে কোম্পানিগুলো। এমনকি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।
১৯৫০ সাল থেকে তারা নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র তৈরি করে আসছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনীর হাতে ২,৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১০ গুণ বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
ফিউজ এবং ইলেকট্রনিক ডেটোনেটর সরবরাহ করছে ভারতীয় ও রাশিয়ান কোম্পানিগুলো। সরবরাহের রেকর্ড এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
মিয়ানমারের অস্ত্র কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জার্মানি, জাপান, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়। এই ডিভাইসগুলি পরিচালনার জন্য সফ্টওয়্যারের উত্স হল ইসরাইল এবং ফ্রান্স। এসব ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরকে ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে। ১৯৮৮ সালে, মিয়ানমারে ছয়টি অস্ত্র কারখানা ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৫। কয়েক দশক ধরে দেশটির সামরিক বাহিনী অনেক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে, কিন্তু তারা কখনো অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করেনি।