বিকল্প সারি সেচ পদ্ধতি।কমবে পানির অপচয় এবং বাড়বে মুনাফা
এই কৃষিক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ পানির আধার বিভিন্ন কারণে ধীরে ধীরে নীচে নামছে। সেচ ব্যয় বাড়ছে কৃষকদের জন্য। তবে বিকল্প ফারো বা সারি সেচ পদ্ধতি ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কম পড়ে। ৩০-৩৫ শতাংশ পানি সাশ্রয় হয়। ফলে লাভ তিন থেকে দশ শতাংশ বেশি হয়।
সরকারের কৃষি তথ্য পরিষেবা অনুসারে, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমি৮৫ লক্ষ ৮৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ৭৬ লাখ ১৪ হাজার ৫৭২হেক্টর জমিতে সেচ দিতে হয়। এই সেচ জমিগুলির আশি শতাংশ অগভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অনুসারে, প্রচলিত সেচ ব্যবস্থা জমি ও ফসলের প্রকৃত চাহিদার চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি পানি সরবরাহ করে। এটি পানির বিশাল অপচয়। পানির এই অপচয় রোধে বিকল্প সেচ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ইতিমধ্যে, ‘বিকল্প ফারাও বা সারি সেচ পদ্ধতি’ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মো: তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাবিসিয়ায় ফেরাউন সেচ ব্যবস্থা এ দেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত কার্যকর। এটি পানির অপচয়কে ৩০শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মো: তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রবি ফসলে কমপক্ষে তিন বার সেচ দিতে হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে শস্যের চাহিদার চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি পানি প্রয়োগ করা হয়। এতে পানি অপচয় হয়। আবার, এই পদ্ধতিটি প্রায়শই জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে ফসলের শিকড় পচে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ডাঃ তৌফিক আরও বলেছেন, “এই সেচ ব্যবস্থা ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমায়। এটি পরিবেশগত ঝুঁকিও হ্রাস করবে।
এ বিষয়ে কৃষিবিদ এবং বহুজাতিক সংস্থার কর্মকর্তা জহুরুল হক সরকার বলেন যে কৃষিক্ষেত্র ও এর ব্যবস্থাপনা টেকসই করার জন্য গবেষক প্রযুক্তিগুলি দ্রুত সম্প্রসারণ করা দরকার। পানির অপচয় রোধে বিকল্প ফড়ো সেচ পদ্ধতি একটি খুব কার্যকর পদ্ধতি। এটি বিদ্যুত এবং জ্বালানী ব্যয়ও হ্রাস করতে পারে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) পরিচালক (উদ্যান) ড.আবেদা খাতুন বলেন, বিএআরআই মাঝারি পানির ব্যবহারের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত এবং প্রত্যাশিত ফলন উত্পাদন করার লক্ষ্যে টেকসই, উন্নত এবং লাভজনক সেচ উদ্ভাবনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় বিকল্প ড্রেন সেচ প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়।