• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    বিএনপির গণঅবস্থান আজ রাজপথে থাকবে আ’লীগ

    বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলোর একযোগে গণঅবস্থান কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় আজ রাজধানীজুড়ে সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির অবস্থানসহ নগরীর মোট আটটি স্পটে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে শরিক দলগুলো। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো অন্তত পাঁচটি স্থানে বড় সমাবেশের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
    সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের কর্মসূচি কিছুটা হলেও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও উভয় পক্ষই ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি’ ঘোষণা করেছে। এদিকে সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত না করার শর্তে বিএনপিকে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। গতকালও বিরোধী দলের জনসমাবেশ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রবেশপথে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
    ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিএনপির ১০ দফা দাবিতে আজ ঢাকাসহ দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজধানীর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয়ভাবে এ কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।
    সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অন্যান্য বিভাগে পালিত হবে বিএনপির এই কর্মসূচি। এ ছাড়া একযোগে আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর সাতটি স্থানে প্রায় ৫২টি দল ও সংগঠন পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করবে।
    তবে জামায়াতে ইসলামী ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের সব মহানগর শাখায় আলোচনা সভার আয়োজন করবে দলটি। আজকের গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে নতুন কর্মসূচি হিসেবে আগামী ১৬ জানুয়ারি বিরোধী দলগুলো বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে।
    অন্যদিকে বিরোধী দল ও জোটের এ ধরনের কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীজুড়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকার ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপির পাবলিক স্পেস কর্মসূচিকে ইস্যু হিসেবে নেওয়ার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপনের কর্মসূচিও এগিয়ে নিয়ে এসেছে সরকার সমর্থকরা। এ দুই ইস্যুতে এ পর্যন্ত তারা রাজধানীর পাঁচটি স্থানে শান্তি সমাবেশ ও আলোচনা সভার ঘোষণা দিয়েছে।
    রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের নেতৃত্বে অবস্থান সমাবেশ করবে সরকার সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে বিশাল শোডাউন হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যবিরোধী শান্তি সমাবেশ বিকাল ৩টায় মিরপুর ১ নম্বর ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। উভয় কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
    এদিকে আওয়ামী লীগের সংগঠন যুবলীগও রাজধানীতে দুটি বড় সমাবেশ করবে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে যুবলীগ-ঢাকা মহানগর উত্তরের ব্যানারে সকাল ১১টায় রাজধানীর ফার্মগেটে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ব্যানারে দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৃথক সমাবেশ করবে। সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে সমাবেশ করবে দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ।
    বিএনপি ও জোটের নতুন কর্মসূচি : আজকের জনসভার পর নতুন কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বিএনপি ও জোটের শরিকরা। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৬ জানুয়ারি ১০টি বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ২৬ জানুয়ারি জোটের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
    এ ছাড়া ১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি পালন করবে দলটি। ২৫ জানুয়ারি বাকশাল দিবস উপলক্ষে বিএনপি নতুন কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে। পতাকা, মানববন্ধন বা বিদ্বেষ প্রকাশের জন্য ওই দিন সমাবেশ করা হতে পারে।
    এজেডএম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. এ জেড এম জাহিদ বলেন, তাদের আলোচনা সফল হয়েছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। তবে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কের একপাশে তারা এই কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, যান চলাচল বিঘ্নিত হবে না শর্তে বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
    এরই মধ্যে বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি ‘গণস্থান’ সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    মন্তব্য করুন