বাঞ্ছারামপুরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া (২২) মারা যান। এছাড়া সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
শনিবার বিকেলে উপজেলা সদরে মোল্লার বাড়ির সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত নয়ন উপজেলার চরশিবপুর এলাকার রহমত উল্লাহর ছেলে। তিনি উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ময়মনসিংহ সায়েদুজ্জামান কামাল এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কুমিল্লা বিএনপির ৮০০ থেকে এক হাজার বিএনপি নেতাকর্মী নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলি চালায়। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাড়ে সাতটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে (৩২), উপ-পরিদর্শক আতিউর রহমান (৩৫), আফজাল হোসেন (৩০), বিকিরণ চাকমা (৩০)। ৩২), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩) ও বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬)।
উপজেলা বিএনপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।এরই প্রেক্ষিতে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা সদর এলাকায় বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণ করেন। লিফলেট বিতরণ শেষে ১৯৯০-১৯৯১ সালে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরের মোল্লা বাড়ি থেকে বিএনপি ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিলটি উপজেলা সদর বাজার, বাঞ্ছারামপুর থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মোল্লা বাড়ি মসজিদের সামনে সমবেত হয়। বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে জড়ো হয়। এ সময় সাঈদুজ্জামান কামালকে গ্রেপ্তার করতে যায় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর নয়নকে গুলি করা হয়।
এদিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমান (২৫) নামে দুই বিএনপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানান, বিকেলে আচমকা মিছিল নিয়ে থানার সামনে বিএনপির শতাধিক থেকে দেড় শতাধিক নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তারা সেখানে উপস্থিত টহল দলের দুই কনস্টেবলের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কনস্টেবল এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বিএনপির এক কর্মী।