• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    বাজারদর।ঢাকায় সবজির দামে হঠাৎ ‘আগুন’

    টালমাটাল সবজি বাজারে সবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছিল। কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার ‘আগুন’ ঝরছে বলে মনে হচ্ছে। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও পাঁচটি সবজির দাম হু হু করে বেড়েছে। প্রতি কেজি ৫ থেকে ১০ টাকা নয়, বেড়েছে সর্বোচ্চ ২০ টাকা। মরিচের লবণাক্ততাও বেড়েছে। লেবু ও ব্রয়লার মুরগির দামে আরেক দফা বেড়েছে। রমজানের আগের দিনের গরমে চিন্তিত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা।

    শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও কলোনি বাজার ও মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন, গাজর, শসা, বরবটি ও ধানদাশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ করে সবজির দাম কেন বাড়ছে তার কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, রমজানে চাহিদা বেশি এমন কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। সবজির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।

    এবার শীত মৌসুমেও সস্তা সবজি ভোক্তার কপালে জুটছে না। প্রায় সব সবজির দামই চড়া। এখন কিছু গ্রীষ্মকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। এগুলোর দামও বেশি। রমজান উপলক্ষে আবারও বেড়েছে কিছু সবজির দাম। তবে গত ২৩ মার্চ ৪০টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। মূল্য তালিকা না টানা হলে কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। তবে গতকালের বাজারে নির্ধারিত দামের কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি।

    গত বৃহস্পতিবার বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। মাত্র একদিনেই সবজির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। গতকাল ভালো মানের লম্বা বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি।

    ইফতারিতে শসা কমবেশি থাকে। শসা এখন কেজি প্রতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। গাজরের দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি গাজর কিনতে ক্রেতাকে গতকাল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দিতে হয়, যা দুদিন আগে ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

    এক দিন আগেও এক হালি লেবু ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কেনা যেত। গতকাল লেবুর হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ শরবত তৈরির এই পণ্যের দাম সম্প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ধনিয়ার দামও বেড়েছে।

    কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে কিছু সবজির দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া রমজান উপলক্ষে কিছু সবজির চাহিদা বেড়েছে এবং দামও বেড়েছে। বেড়েছে খুচরা বাজারে।

    তবে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ইফতারে ব্যবহৃত সবজির কিছু না হলেও দাম বেড়েছে। আট থেকে দশ রমজানের পর কোনো অতিরিক্ত রেট থাকবে না।

    বাংলাদেশ কাঁচামাল মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, রমজানের শুরুতে এসব সবজির দাম সব সময়ই একটু বেশি থাকে। কারণ, রমজানে এসব সবজির চাহিদা বেড়ে যায়। সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। তাই বাড়তি দাম বেশিদিন চলবে না। সর্বোচ্চ ১০ রমজান পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তিনি বলেন, দাম বাড়ার আরেকটি কারণ হলো অনেক ক্রেতাই দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে রমজানের শুরুতেই বাজারে হোঁচট খেয়েছেন তারা। বেশি সবজি কিনলে চাহিদাও বাড়ে। ফলে দাম বেড়ে যায়। তিনি বলেন, চাহিদার চেয়ে বেশি না কিনলে সবজির দাম বাড়বে না।

    কৃষি বিপণন বিভাগ ব্রয়লার মুরগির জন্য প্রতি কেজি ১৬৪ টাকা এবং সোনালি মুরগির জন্য ২৬৯ টাকা প্রতি কেজি মূল্য নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু দেখা যায়, সবজির পাশাপাশি চলছে মুরগির দামও।

    কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, রমজানের দুই থেকে তিন মাস আগে থেকে বিশেষ করে রমজানে যেসব জিনিসের চাহিদা বেশি থাকে সেগুলোর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। যা এখনো বিদ্যমান। ব্যবসায়ীদের কাছেও এমন পণ্যের মজুদ রয়েছে যার চাহিদা বেশি। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বাজারে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। বাজারে কোন পণ্য নেই

    মন্তব্য করুন