বঙ্গবাজার হবে ১০ তলা পাইকারি মার্কেট
আগুনে পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের জায়গায় ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণী বিতান’ নামে ১০ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নতুন মার্কেট ভবনে দোকান থাকবে ৩ হাজার ৪২টি। এরই মধ্যে ডিএসসিসি নিযুক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নকশার কাজ শেষ করেছে। ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর বঙ্গবাজার সংক্রান্ত সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ সভায় তাপস মার্কেটের নকশা সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনাও দেন। আগামী আগস্টের শুরুতে মেয়র কর্তৃক নকশা অনুমোদনের পর মার্কেট নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হবে। ডিএসসিসি ও বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বঙ্গবাজারে বহুতল মার্কেটের নকশার কাজ চলছে। নকশার কাজ করছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। নকশা অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী পোড়া বঙ্গবাজার মার্কেটের ১০৬ দশমিক ২৮ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। যার নাম হবে ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণী বিতান’। ভবনটিতে বেসমেন্ট, নিচতলা ও আট তলা থাকবে। নিচতলা থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত ৩০৪২টি দোকান থাকবে। এর মধ্যে নিচতলায় ৩৮৪টি দোকান, প্রথম তলায় ৩৬৬টি দোকান, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি দোকান, তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় ৭৭৪টি দোকান, চতুর্থ ও ৬ষ্ঠ তলায় ৪০৪টি এবং দোতলায় ৩১৩টি দোকান থাকবে। সপ্তম তল বা আটতলা. ২২টি খাবারের জায়গাও নকশায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২০টি সাধারণ দোকানের জায়গার মধ্যে বঙ্গবাজার হকার মার্কেটের জন্য ৯১৮, গুলিস্তান হকার মার্কেটের জন্য ৮২৯, মহানগর হকার মার্কেটের জন্য ৫৭২ এবং আদর্শ হকার মার্কেটের জন্য ৭০১টি ডিজাইন করা হচ্ছে। নতুন ভবনে ধ্বংসপ্রাপ্ত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চেয়ে ৮১টি দোকান বেশি থাকবে। প্রতিটি দোকানের আয়তন ৮০-১০০ বর্গফুট হবে। এছাড়া নকশায় নতুন ভবনের অষ্টম তলায় সমিতির কার্যালয়, কর্মচারী, নিরাপত্তাকর্মীসহ অন্যান্য কক্ষ রয়েছে। ভবনটিতে সাতটি সিঁড়ি, চারটি ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি, চারটি সাধারণ লিফট এবং চারটি কার্গো লিফট থাকবে। বেসমেন্টে ১৯৬টি গাড়ি এবং ৮০টি মোটরসাইকেল পার্কিং সুবিধা থাকবে।
বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, মেয়রের কাছে আমাদের দাবি ছিল যত দ্রুত সম্ভব মার্কেটের কাজ শুরু করা হোক। চলতি মাসের শুরুর দিকে বাজার-সম্পর্কিত সর্বশেষ সভায় তিনি নকশার বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দেন। আগস্টে নকশা অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেপ্টেম্বর থেকে মার্কেট ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। দশতলা ফাউন্ডেশনের উপরে থাকবে আটতলা মার্কেট। আগের চারটি মার্কেটের প্রথম থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত ২৯৬১টি দোকানের মালিকরা বরাদ্দ পাবেন। নতুন কোনো ব্যবসায়ী দোকান বরাদ্দ পাবেন না।
গত ৪ এপ্রিল আগুনে বঙ্গবাজার সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তৎকালীন ডিএসসিসির করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮৪৫ জন। পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে মোট ২ হাজার ৯৬১টি দোকান ছিল। এর মধ্যে বেঙ্গল ইউনিটে ৮৬৩টি, গুলিস্তান ইউনিটে ৮২৮টি, মহানগর ইউনিটে ৫৯৯টি, আদর্শ ইউনিটে ৬৭১টি দোকান রয়েছে। এ ছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে ৫৯টি এবং বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সে ৩৪টি দোকান ছিল।