‘ফ্রি ফায়ার’ খেলা নিয়ে দন্ধে বন্ধুকে হত্যা
খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক সাব্বির শেখ। তিনি তেরখাদা ও পার্শ্ববর্তী মোল্লাহাট উপজেলায় ভ্যান চালাতেন। দেড় বছর আগে ভ্যান ঠিক করতে গিয়ে মোল্লাহাট উপজেলার ছোট কাচনা এলাকার এক তরুণ গ্যারেজ মেকানিকের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। দুজনেই ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত ছিল, একসাথে খেলত। এই খেলাটিই এক বন্ধুর প্রাণ কেড়ে নিল এবং অন্য বন্ধুকে করেছে হত্যাকারী।
সম্প্রতি খেলা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে বেশ কিছু বিবাদ হয়। সাব্বির (১৫) তার বন্ধুর (১৭) সাথে একটি খেলায় হেরে যাওয়ার পর তার বন্ধুকে (১৭) গালি দেয়। প্রতিশোধ নিতে সাব্বিরের ভ্যান বিক্রির কথা ভাবছে তার বন্ধু।
চলতি মাসের ৯ জানুয়ারি দুপুরে বায়েজিদ নামের এক শিশুর মাধ্যমে সাব্বিরকে ফোন করেন ।পরে তার গ্যারেজের পেছনের রুমের একটি বিছানায় বসে দুজনে ফ্রি ফায়ার গেম খেলতে থাকে। খেলা চলাকালীন একপর্যায়ে পেছন থেকে গামছা দিয়ে গলা পেঁচিয়ে সাব্বিরকে শ্বাসরোধ করে ছেলেটি। পরে সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাব্বিরের ভ্যান কেটে ভাঙ্গারী হিসেবে বিক্রি করে দেন। ওই রাতে সাব্বিরের লাশ গ্যারেজের পাশে শেখ ওবায়দুর রহমানের গুদামের নিচে ফেলে নারায়ণগঞ্জে পালিয়ে যায়।
সাব্বির শেখ খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামের শেখ বোরহানের ছেলে। নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর তার বাবা ১১ জানুয়ারি তেরখাদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ১৭ জানুয়ারি, মোল্লাহাটের ছোট কাচনার শেখ ওবায়দুর রহমানের গোডাউন থেকে সাব্বিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সাব্বিরের পরনের কাপড় দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেন তার বাবা। তিনি ২৩ জানুয়ারি তেরখাদা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
গত রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মেঘনা ব্রিজ এলাকা থেকে মেকানিক ছেলেকে আটক করে বাগেরহাট পিবিআই। মঙ্গলবার বিকেলে পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতারকৃত ছেলে বাগেরহাট সদর থানার বাসিন্দা।
পিবিআই বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবদুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্যারেজ মেকানিক ছেলে সাব্বিরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।