ফেনী নদীর বালুঘাটের নিয়ন্ত্রণ।আধিপত্য বিস্তারে গুলিবর্ষণ, বন্দুকধারীদের ধাওয়া বিজিবি
মিরসরাইয়ের কেরহাট এলাকার ফেনী নদীর তীরবর্তী বালুঘাটে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার পার্শ্ববর্তী ছাগলনাইয়া থেকে সন্ত্রাসীরা এসে এ ঘটনা ঘটায়। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বিজিবি বন্দুকধারীদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। গোলাগুলির ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, বালু উত্তোলনের জন্য অনেক আগে ফেনী নদীর চট্টগ্রাম অংশ দুই ভাগে লিজ দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। মিরসরাই উপজেলার আলীনগরের মোল্লাঘাট ইজারা নেয় আবুল হোসেন এন্টারপ্রাইজ। অপরদিকে কেরহাটের জালিয়াঘাট ইজারা নেন সুলতান গিয়াস উদ্দিন। ইজারা নিয়ে তারা নদী ছাড়াও ছাগলনাইয়া এলাকার বিভিন্ন ফসলি জমি ও সরকারি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে, এ নিয়ে ইজারাদারদের সঙ্গে ছাগলনায়ার একপক্ষের বিরোধ চলছিল।
স্থানীয়রা জানান, ছাগলনাইয়া একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আজ কেরহাটের বালুঘাটে আধিপত্য বিস্তারের জন্য মিরসরাইয়ের ইজারাদারদের অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। গুলির শব্দ শুনে পার্শ্ববর্তী আলীনগর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্দুকধারীদের ধাওয়া করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এসময় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
কেরহাটের ইজারা দেওয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুল হোসেন ও তার সহযোগী কামরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তারা ফেনী নদী থেকে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন। পরে ছাগলনাইয়া শুভপুর ইউনিয়নের সদস্য পলাশের নেতৃত্বে ২০-২৫ বন্দুকধারী তাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে আলমগীর নামের এক সন্ত্রাসী ডনলাকে বন্দুক ও আরেকজন শটগান দিয়ে গুলি করে। শব্দ শুনে আলীনগর ক্যাম্পের সুবেদার সহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা এসে শ্রমিকদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেলে অস্ত্রধারীদের ধাওয়া দেয়।
আলীনগর বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার সহিদুল ইসলাম জানান, বন্দুকধারীরা তাদের ধাওয়া করে পালিয়ে যায়। তবে কোনো সন্ত্রাসী শনাক্ত করতে পারেননি বলে জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শুভপুর ইউনিয়নের পলাশ মেম্বারকে ফোন করা হলে তিনি জানান, অসুস্থতার কারণে সোমবার তিনি বাড়ি থেকে বের হননি। ফলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। অপর আসামি ডনলা বন্দুকবাহী আলমগীরকে ফোন করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ছাগলনাইয়া থানার ওসি সুদীপ রায় পলাশ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে ঘটনাটি মিরসরাইয়ের কেরহাট অংশে হওয়ায় ছাগলনাইয়া থানার এখতিয়ারভুক্ত নয়। তাই তারা কোনো অ্যাকশনে যেতে পারেনি। তবে বিজিবির ধাওয়া খেয়ে বন্দুকধারীরা ছাগলনাইয়া শুভপুরে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।