• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    ফিল্ড হাসপাতালে স্বস্তি। বিএসএমএমইউ উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

    সারাদেশের সব হাসপাতালের রোগীদের চাপে ত্রাহি ত্রাহি অবস্হার মধ্যে সবাইকে স্বস্তি দিয়ে চালু হলো বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতাল । এটি দেশের প্রথম সরকারি পরিচালিত ফিল্ড হাসপাতাল। দেশে করোনা বেডের অভাব রয়েছে, সেখানে ফিল্ড হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা কিছুটা স্বস্তি এনে দেবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন যে যদিও এটি বর্তমানে ৩৫৭ শয্যা নিয়ে কাজ করছে, ভবিষ্যতে এটি এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হবে।

    হাসপাতালে ৪০ টি আইসিইউ বেড রয়েছে। যদিও বাকি ৩১৭ টি স্বাভাবিক শয্যা, তবুও রোগীদের নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে কারণ প্রত্যেকের একটি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন রয়েছে। শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসার ৯১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। শনিবার বিকেল ৩ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলের ডেকোরেশন সম্পূর্ণ বদলে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডগুলি মেলামাইন বোর্ড দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। সাধারণ রোগীদের পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসার জন্য চার তলা কনভেনশন সেন্টারের নিচতলা এবং দ্বিতীয় তলায় পৃথক ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে। এবং ভবনের নিচ তলায় ICU বেড রাখা আছে। শ্রমিকরা জানান, এখানে সাজানো সব বিছানা ও যন্ত্রপাতি নতুন। এমনকি গতকাল হাসপাতাল উদ্বোধনের পরও হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সরা পরীক্ষা করছিলেন যন্ত্রপাতি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় এস্কেলেটর নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কাজগুলি সম্পন্ন হলে, পর্যায়ক্রমে করোনা রোগীদের জন্য সেখানে শয্যা তৈরি করা হবে। এখানকার ডাক্তার ও নার্সদের মতে, রবিবারের মধ্যে কাজ শেষ করে রোগীকে ভর্তি করা সম্ভব হবে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ দোতলায় একটি ফার্মেসি কর্নার খুলেছে। সেখান থেকে রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ কম খরচে সংগ্রহ করা যাবে।

    ফার্মেসির দায়িত্বে থাকা নাসির উদ্দিন বলেন, সব ওষুধ এখনো আসেনি। ফার্মেসী রবিবার থেকে খোলা থাকবে এবং এখান থেকে ২৪ ঘন্টা ওষুধ সংগ্রহ করা যাবে।

    এখানে বাইরের ফার্মেসী থেকে অনেক কম দামে ওষুধ দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন যে মেরুপেনাম ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। এখানে এই ওষুধ পাওয়া যাবে মাত্র ছয়শ টাকায়। এই কর্নারটি মূলত হাসপাতালের রোগীদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে।

    উদ্বোধনের পর জাহিদ মালেক বলেন, হাসপাতালে করোনার চিকিৎসার সব সুবিধা রয়েছে। যাইহোক, সব রোগী এখানে ভর্তি হবে না।

    স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতালগুলো আর রোগীর মানসিক চাপ সামলাতে পারছে না। করোনা রোগীর সংখ্যা কমানোর সময় এসেছে। আমরা এমন অবস্থায় আছি যেখানে ঢাকা শহরের প্রায় ছয় হাজার শয্যার মধ্যে এক হাজার শয্যাও ক্যাভিড রোগীদের জন্য উপলব্ধ নয়।

    জাহিদ মালেক আরও বলেন, করোনার চিকিৎসার পাশাপাশি এখন হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ নেই।

    কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ফিল্ড হাসপাতালে ১০,০০০ লিটার অক্সিজেন ভি আই ট্যাঙ্ক স্থাপন করা হয়েছে। ভর্তি রোগীদের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। গতকাল বিকেলে দেখা গেছে, ফিল্ড হাসপাতালে এখনো শয্যা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। চারতলা ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় শয্যা স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, বিএসএমএমইউ উপাচার্য শরফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

     

    মন্তব্য করুন