প্রাক্তন কাউন্সিলর রাজীবের ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব প্রায় ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। প্রায় সাড়ে চার বছরে তার চারটি ব্যাংকে ৫টি অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২২ কোটি টাকারও বেশি অর্থ জমা পড়েছিল। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলার তদন্তকালে সিআইডি এই তথ্য পেয়েছে।
রাজীব ও তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে ১৬ মে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। রাজিবের এক কোটি ৪৬ লাখ ৭৭ হাজার ১৯২ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। তবে সিআইডি এখনও তাদের ডকুমেন্টারি প্রমাণ পায়নি।
রাজিব ছাড়াও অপর পাঁচ আসামি হলেন- শাহ আলম হোসেন জীবন, কামাল হোসেন, নুর মোহাম্মদ, রুহুল আমিন ও তামজিদ খান হৃদয়। এর মধ্যে রাজীব ও তামজিদ খান হৃদয় জেলে রয়েছেন। চারজন পলাতক।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ এ, র্যাব অ্যান্টি-ক্যাসিনো এবং দুর্নীতি দমন অভিযান শুরু করে। পরে পুলিশও অভিযানে যোগ দেয়। যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, এনামুল হক আরমান, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমসহ আরও অনেকে ধরা পড়ে।
চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১৯ অক্টোবর রাতে রাজিবকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি তখন ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়। ২০ অক্টোবর র্যাব তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় দুটি মামলা করে। একটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং অন্যটি অস্ত্র আইনের আওতায়।
কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার কয়েক বছর পরে রাজীব ধনী ব্যক্তি হন। এর আগে তার কোনও দৃশ্যমান পেশা ছিল না। পরে দুদক ও সিআইডি তার আয়ের তদন্ত শুরু করে। অস্ত্র ও মাদক ছাড়াও তার বিরুদ্ধে পরে আরও দুটি মামলা করা হয়। একটি মামলা দুদক এবং অন্যটি সিআইডি দায়ের করেছে।
সিআইডির বক্তব্য অনুযায়ী রাজীব অবৈধ প্রভাব প্রয়োগ করে চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন সংগঠিত অপরাধে জড়িত ছিল। এ ছাড়া তিনি জমি দখল, মাদক ব্যবসা, গরুর হাটের টেন্ডারবাজি এবং অবৈধভাবে বাড়ি, জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রি করে বেনামে প্রতিষ্ঠান খোলার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে জমি স্থানান্তর করেছেন।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ ট্যাক্স বছরে রাজীব তার আয়কর নথিতে মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৩ লাখ চার হাজার ৬০০টাকা উল্লেখ করেছিলেন। তার অবৈধ সম্পদের ১৯ কোটি ৯১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। জমি দখলের অভিযোগ ছিল, তবে এটি তার নামে দলিল করা হয়নি। অন্যের নামে জমি আছে। এছাড়াও, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি তার পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেন তবে এটি অন্য কারও মালিকানাধীন।