প্রশাসক নিয়োগের পরও কাটেনি স্থবিরতা,ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের এক মাস পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে গত ১৯ আগস্ট দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে মেয়রদের অপসারণ ও প্রশাসক নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। আদেশে কাউন্সিলরদের সরানো না হলেও মামলার ভয়ে মাঠে নেই তারা। ফলে সিটি করপোরেশনের সেবা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সাবেক মেয়রদের শুরু করা উন্নয়নকাজও বন্ধ রয়েছে। এতে বিশেষ করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সব উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন শুধু রুটিন কাজ চলছে। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দুই প্রশাসক মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তাই তারা সিটি করপোরেশনে শিফটে অফিস করছেন। সকালে সিটি করপোরেশনে সময় দিলে , বিকেলে মন্ত্রণালয়ে আবার বিকেলে করপোরেশনে সময় দিলে সকালে মন্ত্রণালয়ে। তারা সব সময় সিটি করপোরেশনের সঙ্গে থাকেন না। তা ছাড়া অন্য বিভাগীয় প্রধানরাও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। প্রশাসকদের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। তারা কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন না।
কর্মকর্তারা জানান, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে গত ১৫-১৬ বছরে যারা এই দুই সিটিতে নিয়োগ পেয়েছেন, তারা বেশি আতঙ্কে রয়েছেন। অনেক কর্মকর্তা ভয়ে অফিস করছেন না। কেউ কেউ অফিসে গেলেও দ্রুত হাজিরা দিয়ে চলে যায়।
দুই সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজের একটি বড় অংশ করে থাকে প্রকৌশল বিভাগ। উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে যেসব কাজ শুরু হয়েছিল, সেগুলো চলমান রয়েছে। এর ৭০-৮০ শতাংশ কাজ শেষ পর্যায়ে। নতুন অর্থবছরে সাবেক মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম যে কাজগুলো করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলো শুরু হয়নি। পুরোনো কাজের কিছু কাজ বাকি রেখে ঠিকাদার চলে গেছে। অন্যদিকে গত এক মাস ধরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে অপসারণ ও পুনরায় যোগদানের কাজ চলছে। এ নিয়ে প্রকৌশলীরা বিভক্ত। কাজের চেয়ে পদ ধরে রাখার প্রতিযোগিতা চলছে তাদের মধ্যে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলছে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে কিছু ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই চলে গেছে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আদিবুরিঙ্গা চ্যানেলের পুনরুদ্ধারের কাজ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া যে খাল সংস্কারের কাজ চলছিল তা এখন বন্ধ রয়েছে।
উন্নয়ন কাজ না চললেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এগুলো সাধারণত ওয়ার্ড অফিসের কাউন্সিলররা করতেন। কাউন্সিলররা অনুপস্থিত থাকায় তাও প্রায় বন্ধ।